১০ দিন চোরের একদিন গিরস্তের বা পাপ বাপকেও ছাড়ে না- প্রবাদের মতো অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার বিচারে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে বরখাস্ত ওসি প্রদীপের। সঙ্গে তার প্রধান দোসর লিয়াকতেরও। অন্তত কক্সবাজারের এ ঘটনায় আইনের শাসনের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে।
সিনহা হত্যার পর টেকনাফের এ পরিস্থিতি সামনে আসে। দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনায় আসে সিনহা হত্যার ঘটনা এবং ওই অঞ্চলে মাদক ব্যবসায় পুলিশসহ কারও সম্পৃক্ততার কথা। সেনাবাহিনীর প্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তখন পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা পুলিশের প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে বদলি করা হয়। সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটিও করে। ওই কমিটি ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়।
সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে দেড় বছরের মধ্যে বিচার হয়েছে হত্যাকাণ্ডটির। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনার এক মাসের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পুলিশের হঠকারী ও অপেশাদারি আচরণ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। আদালতের রায়ের সঙ্গে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সেই সঙ্গে আবারও জানান দেয়া হলো- পুলিশ বা কোনো বাহিনীর কোনো সদস্যের কৃত অপকর্মের দায় গোটা বাহিনীর নয়।
এই বার্তা সমুন্নত রাখতে তথা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসতে সিনহার মতো সব হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকরের বিকল্প নেই। কক্সবাজার টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মাদক ব্যবসার নামে অনেকের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছেন-এমন অভিযোগ রয়েছে ওই অঞ্চলে। কুকর্মে তার অন্যতম পার্টনার ছিলেন লিয়াকত। অথচ ‘লিয়াকত’ নামের অর্থ যোগ্যতা-মেধা। লিয়াকত তার সেই মেধা-যোগ্যতাকে খাটিয়েছেন ভুল পথে। প্রদীপ গ্যাংয়ের অন্ধকারে সর্বনাশ হয়েছে কতো জনের। বিচারের রায়ের আগে বা ঘটনার পরপরই প্রদীপের তেল শেষ হয়ে যায়। প্রদীপের সলতের মধ্যে আর তেল না পড়ুক।