ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ শেষ হলো সম্প্রতি। গণমাধ্যমগুলো প্রায় সবই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পরাজয়কে মুখ্য বিষয় হিসেবে সংবাদ করেছে। সত্যতা যাচাইয়ে এই সংবাদের বিরোধিতা করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু সংবাদগুলো পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়ে যায়, আসলে সংবাদমূল্য হিসেবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানটি গণমাধ্যমগুলোর কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। তাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- আওয়ামী লীগের পরাজয়ের বিষয়টি। তবে সংবাদে যাই অগ্রাধিকার পাক আর না পাক, সাধারণ মানুষ আখেরে এটা স্বীকার করছে, হ্যাঁ ভোটটা দিনের বেলাতেই হয়েছে এবং সেটা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের দাবিও তাই।
নির্বাচন কমিশনের এমন দাবিটিই এবার আক্রান্ত হয়েছে, গণমাধ্যমের সংবাদ কিংবা কিছু নির্বাচন বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণে। তারা গত নির্বাচনগুলোর ব্যর্থতার রেশ টেনেই হোক কিংবা অন্যকারণেই হোক, তারা সমালোচনা করছেনই। আচ্ছা গত কয়েক বছরে যত নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনগুলোর তুলনায় এবারের ইউপি নির্বাচন কি ভালো হয়নি? সমালোচকরা প্রথমই উল্লেখ করতে পারেন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে প্রাণহানী ও হাঙ্গামার প্রসঙ্গকে। এই তো সদ্য সমাপ্ত চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ৩ জনের প্রাণ হারানোর বিষয়টি। এমনকি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর আহত হওয়ার বিষয়টিও উদাহরণ হিসেবে তারা উল্লেখ করতে পারেন, অন্য অনেকের আহত হওয়ার খবরের সঙ্গে ।
বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা থাকে প্রচণ্ড। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য অনেক। এখানে প্রার্থীরা তাদের পরিবার-পরিজন এবং সমর্থকদের অধিক হারে যুক্ত করতে পারেন। অতি নিকটজন প্রার্থী হওয়ার সুবাদে প্রার্থীর জয় পরাজয়কে তারা নিজেদের জয় পরাজয় হিসেবে গণ্য করেন। সেক্ষেত্রে উত্তেজনা থাকে জাতীয় নির্বাচন থেকে অনেক বেশি। ফলে এই নির্বচানে নির্বাচনী হাঙ্গামা নিত্য ঘটনা।