পূর্ব বাংলার বাঙালিদের মধ্যে যেসব মানুষ পরিপূর্ণভাবে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে ছাপিয়ে উঠতে পেরেছিলেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক তাদের অন্যতম। শিক্ষাগত যোগ্যতাকে ছাপিয়ে যাওয়া বলতে বোঝাতে চাইছি এই যে, তার নাম উচ্চারণের সাথে সাথে মনে হয় তিনি বুঝি তেমন শিক্ষিত কেউ নন। অথবা মনে হয় তিনি বেশিদূর পড়াশোনা করেননি। যেমনটি জসীমউদ্দীনের ক্ষেত্রে ঘটে।
বাল্যকালে জসীমউদ্দীনের কবিতা পড়ে এই ধারণা হয়েছিল যে, তিনি বুঝি অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত একজন মানুষ। কবিতা লেখার একটা সহজাত প্রতিভা নিয়ে তিনি জন্মেছিলেন। কিন্তু পরে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামজাদা ছাত্র ছিলেন। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষকও। শেরে বাংলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ছাত্রজীবনে এত প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন, যে পাতা একবার চোখ বুলাতেন সে পাতা ছিঁড়ে ফেলতন—এই মিথ চালু থাকা সত্ত্বেও সাধারণের দৃঢ় বিশ্বাস যে, তিনি খুব বেশি শিক্ষিত ছিলেন না।