জাতীয় বাজেটে ট্যাক্স ইস্যুটা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের তিন প্রধান উৎস আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও করপোরেট কর। এর মধ্যে করপোরেট কর হারের সঙ্গে পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গতানুগতিক চিন্তাধারা হলো করপোরেট কর বেশি ধার্য হলে রাজস্ব সংগ্রহ বেশি হবে। কিন্তু করপোরেট কর বেশি হলে যে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, করপোরেট সুশাসন বাধাগ্রস্ত হয়—সেদিকে কেন জানি মনোযোগ দেওয়া হয় না। কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞরা করপোরেট কর কমানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
আমাদের দেশে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা বরাবরই একটা চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে করোনাবিধ্বস্ত অর্থনীতিতে কর হার বাড়ানোর সুযোগ নেই। তবে এবারও করের আওতা বা করজাল (ট্যাক্স নেট) বিস্তৃত করার সুযোগ রয়েছে। অনেক ধনী লোক ট্যাক্স নেটের বাইরে আছেন এখনো। বিভিন্ন কারণে তাঁরা হয়তো একটা টিআইএন বাধ্য হয়ে নিয়েছেন; কিন্তু প্রকৃত আয় প্রকাশ করেন না। এই সংখ্যাটা প্রচুর। তাঁদের মধ্যে কয়েকটি পেশাজীবী সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছেন, যাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসের মাধ্যমে বহু অর্থ উপার্জন করলেও তার খুব সামান্যই প্রদর্শন করেন। স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের বিরাট অংশও করজালের বাইরে রয়ে গেছেন। সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের দেশে প্রপার্টি সার্ভে (সম্পত্তি জরিপ) ঠিকমতো হয় না। এ বিষয়ে এনবিআরের একটি শাখা আছে। তারা ততটা তৎপরতা দেখাতে সক্ষম হয়নি এখন পর্যন্ত। উপজেলা পর্যায়ে ট্রেডিং বেইস (ব্যবসানির্ভর) অনেক ধনী লোক আছেন, যাঁরা বড় দোকানদার বা হোলসেলার। তাঁদের সাধারণত প্রচুর জমিজমা থাকে এবং তাঁরা বিল্ডিং ভাড়া পান। তাঁদের আয়ের নানা পথ থাকে। কিন্তু ট্যাক্স নেটের অধীনে তাঁরা নেই। তাই ইনকাম ট্যক্সের নেটটা আরো বাড়ানো গেলে রাজস্ব সংগ্রহে গতি আসবে।