কৃষকের জন্য কেজিতে এক টাকা এবং মিলারদের জন্য কেজিতে তিন টাকা দাম বাড়িয়ে এবারের বোরো মৌসুমে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন ধান এবং সাড়ে ১১ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা হবে ২৭ টাকা কেজি দরে। আর মিলারদের কাছ থেকে ৪০ টাকায় সিদ্ধ চাল এবং ৩৯ টাকায় আতপ চাল কেনা হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে ভোক্তার আয় কমলেও বেড়েছে ব্যয়। কারণ বাজারে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম চড়া। গত ১ মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে মোটা চালের দাম। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। বস্তুত, রমজান শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
চালের দাম কে বাড়ায়, মিলার না আড়তদার?
ব্যাবসায়ীদের কারসাজিতে বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। কিন্তু এই ব্যবসায়ী মূলত কারা? মিলাররা দায়ী করছেন আড়তদারদের। আড়তদার দায়ী করছেন মিলারদের। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা নয়, ওই দুপক্ষই জড়িত। এদিকে আবার আড়তদার ও মিলাররা সুর মিলিয়ে বলছেন, নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে। এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে দাম কমতে শুরু করবে। দেশের চালের মোকাম নামে খ্যাত জয়পুরহাট, বগুড়া ও নাটোরের মিলার ও রাজধানীর বাবুবাজারের আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার সরকারের গুদামে চাল ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার টন। খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের গুদামে এর চেয়ে কম মজুত ছিল ২০০৮ সালের অক্টোবরে, ২ লাখ ৮০ হাজার টন। এর আগের বছরই ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে দেশে চালের উৎপাদন ২০ লাখ টন কম হয়েছিল। তখন ক্ষমতায় ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা সময়মতো চাল আমদানি করতে না পারায় বাজারে মোটা চালের কেজি ৫০ টাকায় ওঠে। আর এখন বাজারে ভালো মানের মোটা চালের কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ। সরু চালের কেজি এখন ৬২-৬৫ টাকা।