কৈশোরে ঈদের ছুটিতে একবার গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। একদিন বিকেলে মা-চাচিদের সঙ্গে হাঁটতে বের হয়েছি। হঠাৎ সামনে একটি জটলা চোখে পড়ে। উচ্চকণ্ঠে ঝগড়া করছেন দুই নারী। জানতে পারলাম সম্পর্কে তাঁরা সতিন। ‘সতিন’ শব্দটির সঙ্গে সেই প্রথম পরিচয়। ঝগড়ার বিষয়, সংসারে দুই নারীর কাজের বণ্টন। ঝগড়ার তীব্রতা বাড়তেই থাকল। প্রবীণ এক নারী কী বুঝে মন্তব্য করলেন, ‘এ জন্যই বলি মেয়েমানুষ মেয়েমানুষের শত্রু।’ তাঁকে সমর্থন করলেন উপস্থিত কয়েকজন নারী ও পুরুষ। ধন্দে পড়ে গেলাম। চিন্তা করে কূলকিনারা পেলাম না। নারী দুজন একে অন্যের শত্রুর খেতাব পেলেও যাবতীয় সমস্যার মূলে থাকা পুরুষটির দিকে আশ্চর্যজনকভাবে কেউ আঙুল তুলল না।
আমাদের সমাজে ‘নারীই নারীর শত্রু’ কথাটি যেন এক স্বীকৃত সত্য হয়ে গেছে। অবাক হই, দুনিয়ায় রোজ লাখ লাখ পুরুষ অন্য পুরুষের সম্পত্তি আত্মসাৎ করছে, হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ করছে; অথচ ‘পুরুষই পুরুষের শত্রু’ এমন কথার চল হয়নি কিন্তু। অথচ নারীরা বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ‘নারীর শত্রু’ উপাধি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে।