ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির যে গুরুতর অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে এবং তা প্রায়শ হয়ে চলেছে- সে কথা গত দুই বছরের বেশি সময় সরকার কানেই তোলেনি। এখনও সরকার তা বুঝবে, তেমন লক্ষণ নেই। গাজীপুরের কারাগারে ওই আইনের মামলায় বন্দি অবস্থায় প্রকৃতিপ্রেমিক, প্রাণিপ্রেমিক, আমুদে, সজ্জন বলে বন্ধুমহলে প্রিয়, পরিবারে পিতা-মাতার আদরের একমাত্র সন্তান, স্ত্রীর প্রেমময় স্বামী, অরাজনৈতিক নিরীহ গোছের ৫৩ বছর বয়সী লেখক মুশতাক আহমেদের আকস্মিক করুণ মৃত্যুতে সমাজে বেদনা-ক্ষোভ-বিক্ষোভ মিশ্রিত তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এক দিন পরই ২৭ ফেব্রুয়ারি ভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এলে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ পান।
অন্যান্য জায়গায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সড়ক-সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রমুখ কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী ও শাসক দলের নেতারা ব্যক্তির মৃত্যু দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন এবং মৃত্যুর কারণ জানার জন্য প্রশাসনিক তদন্তের কথা বলেছেন। তদন্ত শুরুও হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বা আইনটির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তারা অনমনীয়, অবিচল, দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করে চলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রাজপথ, শাহবাগ মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তোপখানা রোডে মুশতাকের মৃত্যু ও ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবিতে ছাত্র-তরুণদের প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ যেভাবে লাঠিপেটা করেছে এবং ছাত্রদের বিরুদ্ধে পুলিশকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি আইনের কঠোর ধারা দিয়ে মামলা করেছে; তাতে এ ব্যাপারে সরকারের মনোভাব কী, তা স্পষ্ট বোঝা যায়।