ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ সমপ্রতি কারাগারে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। রোববার (৭ই মার্চ) মুশতাকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সস্ত্রীক তার বাসায় যান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার, অ্যাকটিভিস্ট, টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব শহিদুল আলম। শহিদুল নিজেও নিরাপদ সড়কের দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ছাত্র বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে আইসিটি আইনের মামলায় আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছিলেন।
১০৭ দিন পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শহিদুল বলেছিলেন ‘মুক্তি প্রত্যেকের কামনা। স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন নাগরিকরা মুক্ত থাকবে- সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাধীন নাগরিকরা যদি তাদের মুক্তচিন্তা বা স্বাধীনভাবে কথা বলতে না পারে, তাহলে তারা পরাধীন।’মুশতাকের পরিবারের সঙ্গে কাটানো অভিজ্ঞতা নিয়ে শহিদুল নিউজডটকম-এ ‘তার যা কিছু আমার কাছে রইলো’ শিরোনামে ইংরেজিতে লিখেছেন।
তার সেই লেখাটির হুবহু অনুবাদ তুলে ধরা হলো-‘আমি তাকে ৫৪ বছরের জন্য দেখভালের দায়িত্বে ছিলাম। এখন আল্লাহ্ সেটা নিয়েছেন’- লেখক মুশতাক আহমেদের মা বললেন। একজন সম্ভ্রান্ত নারী ধীরস্থিরভাবে, নিয়ন্ত্রণ না হারিয়ে কথাগুলো বলছিলেন। মাঝে মাঝে তার কণ্ঠস্বর ভেঙে যেতো, তবে তিনি নিজেকে ধরে রাখতে পেরেছিলেন। তিনি কাউকে কষ্ট দিতে চাচ্ছিলেন না। মুশতাকের বাবা অবশ্য অনেকটা প্রকাশ্যেই ভেঙে পড়লেন। তিনি তার সন্তানের কথা বলতে বলতে কাঁদছিলেন- মুশতাকের ফার্মের কথা, ফটোগ্রাফির প্রতি তার ভালোবাসার কথা, মুশতাকের বোনের কথা যিনি আমার মায়ের গড়া স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ‘আমি কি আপনাকে তার ক্যামেরাটি দেখাতে পারি?’ তিনি সতর্কভাবে ৭০-৩০০ মিমি লেন্স সহ ডিএসএলআর ক্যামেরাটি নিয়ে এসে আমার সামনে রাখলেন। মুশতাকের স্ত্রী লিপা মেমোরি কার্ড আর ব্যাটারি নিয়ে আসলেন।