বিএনপি’র ঘরে অশান্তি স্বস্তিতে আওয়ামী লীগ

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি’র ঘরে জ্বলছে অশান্তির আগুন। দলীয় প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থীই নয়, নিজ ঘরের বিদ্রোহী প্রার্থীর হুঙ্কারে ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। এতে লাভবান হতে পারেন নৌকার প্রার্থী মো. রমজান আলী। মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন আগামী ২৮শে ডিসেম্বর। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মেয়র মো. রমজান আলী এবং বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৬ জন দলের কাছে মনোনয়ন চাইলে মো. রমজান আলীকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে নিজ ঘরে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় তিনি নিজেকে নিয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে দলের প্রার্থী  রমজান আলীর ব্যক্তি বিরোধী নেতাকর্মী রয়েছে অনেক। প্রকাশ্যে বিরোধিতায় তাদের দেখা না গেলেও গোপন বিরোধিতা থাকবে।  তারপরও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী মো. রমজান আলী। আর বিএনপি’র তিনজন দলীয় প্রতীকের জন্য লড়াই করলেও আতাউর রহমান আতা পান ধানের শীষ প্রতীক। তবে বিদ্রোহী দুই প্রার্থীর মধ্যে মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক ভিপি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা জুবাইদি সিমকীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। বিদ্রোহী আরেক প্রার্থী অর্থাৎ গেল পৌরসভা নির্বাচনে যাকে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেয়া হয়েছিল সেই পরিচিত মুখ নাসির উদ্দিন আহমেদ যাদু নির্বাচনী মাঠে বহাল তবিয়তে রয়েছে। বিএনপি’র ঘরে বিদ্রোহের আগুন নেভাতে না পারলে দলীয় প্রার্থীর জন্য মহা টেনশনের কারণ হয়ে উঠতে পারে এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিদ্রোহী প্রার্থী যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থেকেই যান তাহলে ভোটের হিসাব-নিকাশ জটিল হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারেন আওয়ামী লীগ। বিএনপি থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তার ওপর দলীয় নেতাকর্মীর বড় একটি অংশ নাখোশ, এমন সুর পাওয়া যাচ্ছে ভোটের মাঠে। সে ক্ষেত্রে সেই অংশের ভোট বিদ্রোহী প্রার্থীর দিকে গড়তে পারে। দেখা গেছে, নির্বাচনী মাঠে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান আতার যেমন পরিচিতি রয়েছে তেমনি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহমেদ যাদুর পরিচিতিও ব্যাপক। ব্যক্তি অবস্থান থেকে দুইজনও কারো চেয়ে কম নয়। তবে বিগত রাজনীতির হিসাব-নিকাশের খাতা খুললে দেখা যায় বিএনপি’র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের ভেতর আলোচনা-সমালোচনা কমতি নেই। দেখা গেছে, বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহমেদ যাদু গেল পৌর নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে অল্প ভোটে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিমের কাছে হেরে যান। পুরো পৌর এলাকায় তিনি বেশ পরিচিতি মুখ বলে দাবি করেন। কারণ তিনি এক সময় পৌর সভায় একাধিকবার কাউন্সিলর ছিলেন। এ ছাড়া বিএনপি’র রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় তিনি। নাসির উদ্দিন আহমেদ যাদু বলেন, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে গত পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। নীল নকশার সেই নির্বাচনে আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেয়া হয়েছিল। এবার দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে একজন বিতর্কিত লোকের হাতে ধানের শীষ তুলে দেয়া হয়েছে। বিগত দিনে যিনি একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের হ্যাভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। জরুরি অবস্থার সময় দলের যখন ক্লান্তিকাল চলছিল তখন ফেরদৌস আহমেদ কোরাইশির দলে ভিড়ে ছিলেন, সে ছবি এখনো রয়েছে। সুবিধাবাদী রাজনীতি করায় দলের দুঃসময়ে তাকে আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন একজন বিতর্কিত লোককে মনোনয়ন দেয়ায় বাধ্য হয়ে আমি প্রার্থী হয়েছি। আর পৌর এলাকার প্রত্যেকটা ভোটার আমাকে চেনেন এবং তারা আমাকেই চাচ্ছেন। দুইবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলাম। যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে পৌর এলাকায় তার পরিচিতি আমার অর্ধেকও না। তাই দলের এই সিদ্ধান্ত শুধু আমাকেই নয় দলের বহু নেতাকর্মীকে মর্মাহত করেছে। বিএনপি’র আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক ভিপি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা জুবাইদি সিমকী। তবে তিনি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়ে যান। প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে তারও ক্ষোভ রয়েছে। এদিকে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান আতা বলেন, দলের শীর্ষ নেতারা দীর্ঘক্ষণ আমার ইন্টারভিউ নিয়েছেন। তারা যাচাই- বাছাই করেই আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিয়েছেন। আর দলের বিদ্রোহী প্রার্থী যিনি হয়েছেন, আশা করি সঠিক সময় তিনি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন এবং দলের সিদ্ধান্ত নেমে নিয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপি’র সকল নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন এবং কাজ করছেন। জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক এডভোকেট জামিলুর রশীদ খান বলেন, দলীয়ভাবে যাকে যোগ্য মনে হয়েছে তার হাতেই ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেয়া হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও আশা করি তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। আর যদি না নেন তাহলে দলীয়ভাবে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us