অন্য যেকোনো পুষ্টির মতো জিঙ্কও সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের দেহে তিনশোরও বেশি এনজাইমের ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যার মধ্যে রয়েছে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালীকরণ, কোষ বিভাজন, কোষের বৃদ্ধি, ক্ষত নিরাময় এবং প্রোটিন এবং ডিএনএ সংশ্লেষণ। বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ জিংকের অভাবজনিত সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিসিয়াল তথ্য অনুসারে, বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পর্যাপ্ত জিঙ্ক গ্রহণ করে না।
ব্যাপকভাবে জিংকের ঘাটতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো প্রোটিনের মতোই আমাদের শরীর এই পুষ্টি সংরক্ষণ করতে পারে না, তাই প্রত্যেককে তার জিংকের প্রয়োজনীয়তা নিয়মিত পূরণ করতে হয়। ইউএসএর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অনুসারে, ১৪ বছরের বেশি বয়সী পুরুষের অবশ্যই দৈনিক ১১ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করতে হবে, এবং ১৪ বছরের বেশি বয়সীদের নারীর ৮ মিলিগ্রাম প্রয়োজন। গর্ভবতী নারীর জন্য জিংক প্রয়োজনদৈনিক গ্রহণ ১১ মিলিগ্রাম এবং স্তন্যদানকারী নারীর ক্ষেত্রে এটি ১২ মিলিগ্রাম। জেনে নিন সাতটি খাবারের কথা যা থেকে আপনি প্রয়োজনীয় জিংক গ্রহণ করতে পারবেন- লাল মাংসপ্রাণিজ খাবারগুলো জিংকের সর্বোত্তম উৎস এবং মাংস এর শীর্ষে রয়েছে।
বিশেষ করে লাল মাংস এই পুষ্টির একটি দুর্দান্ত উৎস। এটি ভিটামিন বি ১২তে ভরপুর, যা উদ্ভিজ খাদ্যে পাওয়া যায় না। তবে মাংসে কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট থাকে এবং এটি বেশি খেলে তা হৃদযন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। সুতরাং, অল্প পরিমাণ লাল মাংস খাওয়া ভালো। ১০০ গ্রাম খাসির মাংসে ৪.৮ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। মুরগির মাংসমুরগির মাংস প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা পেশীর বৃদ্ধি এবং বিকাশে অবদান রাখে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে এটি জিংক সামগ্রীতেও সমৃদ্ধ। নিয়মিত মুরগি খাওয়া আপনার হাড়, হার্টের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভালো। ৮৫ গ্রাম মুরগিতে ২.৪ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। কাজু বাদামকাজু জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী বাদাম।
এটি জিংক, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ এবং ফোলেটে পরিপূর্ণ। এই বাদাম মনো এবং পলিউনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি দুর্দান্ত উৎস। যা হৃদযন্ত্রের ভেতরে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কাজু বাদাম নিয়মিত খেলে আপনার রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ২৮ গ্রাম কাজুতে ১.৬ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। মাশরুমবেশি ক্যালরি না খেয়ে আপনি যদি আপনার ডায়েটে জিঙ্ক যুক্ত করতে চান তবে মাশরুম খান। মাশরুমে ক্যালরি কম এবং ভিটামিন এ, সি, ই এবং আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে। এতে কিছু পরিমাণ জার্মেনিয়ামও রয়েছে, এমন একটি পুষ্টি খুব কম শাক-সবজিতে পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরকে কার্যকরভাবে অক্সিজেন ব্যবহার করতে সহায়তা করে। ২১০ গ্রাম মাশরুমে ১,২ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। কুমড়োর বীজকুমড়োর বীজে জিংকসহ বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদান থাকে।