আরবিতে একটা প্রবাদ আছে, 'সবচেয়ে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বা বিচক্ষণ মানুষ হল ওই ব্যক্তি যে নিজের দোষ-ত্রুটি দেখে।' তাই নিজেকে সংশোধন করা কিংবা দোষ-ত্রুটি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য খুবই জরুরি।
এমন অনেক মানুষ আছে, যারা অন্যের দোষত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করে। অথচ অন্যকে সংশোধন করার আগে নিজের দোষত্রুটি সংশোধন করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অধিকাংশ মানুষ নিজে ভ্রান্তির মধ্যে ডুবে থেকে অন্যের সংশোধনে বেশি উদগ্রীব! এটি কোনো ঈমানদারের নিকট কাম্য নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
- 'তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভুলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?' (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৪)
এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের দোষ-ত্রুটি দেখে না কিংবা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও দোষ-ত্রুটি থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে না। তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা বলেন-
- 'হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের নিয়ে চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোনো ক্ষতি নাই।' (সুরা মায়িদা : আয়াত ১০৫)
সুতরাং প্রথমেই নিজের দোষ-ত্রুটিগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে। এটাই ঈমানের অনিবার্য দাবি। নিজের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা ভুলগুলো শুধরানো সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই নিজের থেকেই সংশোধনী শুরু করতে হবে।
প্রথমে নিজের দোষ খুঁজতে হবে
নিজেদের দোষ-ভুল-ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করতে পারলেই সমাজ ব্যবস্থা পরিশুদ্ধ ও উন্নত হবে। তাই নিজের মধ্যে কোন কোন দোষ বা ভুলগুলো রয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। সে জন্য নিজের চেষ্টা থাকা সবচেয়ে বেশি জরুরি। এ চেষ্টার নাম হচ্ছে ইহতেসাব বা আত্মসমালোচনা। নিজেই নিজেকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা (সমালোচনা) করা।
কোনো ব্যক্তি যদি নিজের দোষ বের করতে 'আত্ম-সমালোচনা' করার চেষ্টা করে সে তা দেখতে পাবে। তার দোষগুলো তার চোখে ভেসে উঠবে। তাই আত্ম-সমালোচনার জন্য নির্জনে একান্তে একাকি নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব, কর্তব্য, করণীয়-বর্জনীয়, সফলতা-ব্যর্থতা এবং ভালো ও মন্দ কাজগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। নিজের ভালো ও মন্দ কাজগুলো নিয়ে হিসাব-নিকাশ করলেই বেরিয়ে আসবে নিজের ভালো-মন্দ সব দোষ ও গুণ।