মনোবিদ্যায় স্নাতক শেষে পড়েছেন সাংবাদিকতাও। তবে দুটোর কোনওটিকেই পেশা না করে পা রেখেছিলেন মডেলিং দুনিয়ায়। জিতেছিলেন ‘মিস ইন্ডিয়া’ খেতাবও। কিন্তু বলিউডের স্বীকৃতি অধরাই থেকে গেছে সোনু ওয়ালিয়ার কাছে। ১৯৬৪ সালের ১৯ ফেব্রয়ারি দিল্লিতে জন্ম সোনুর। অল্পবিস্তর মডেলিং করতেন কলেজে পড়াকালেই। ১৯৮৫ সালে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সে বছর তিনিই বিজয়িনী মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে। তাকে সেরার শিরোপা পরিয়ে দেন তার আগের বছরের বিজয়িনী জুহি চাওলা। মিস ইন্ডিয়া হওয়ার তিন বছর পরে নায়িকা হিসেবে বলিউডে কেরিয়ার শুরু সোনুর।
প্রথম ছবি ‘আকর্ষণ’ মুক্তি পায় ১৯৮৮ সালে। তার আগে ১৯৮৬ সালে তিনি অভিনয় করেছিলেন ‘শর্ত’ ছবিতে। তবে সেখানে তাকে দেখা গিয়েছিল একজন মডেলের ভূমিকাতেই। ১৯৮৮ সালে সোনু অভিনয় করেছিলেন ‘খুন ভরি মাঙ্গ’ ছবিতে। রেখা, কবীর বেদির পাশাপাশি নবাগতা হিসেবে তিনিও নজর কেড়েছিলেন এই ছবিতে। বক্স অফিসে সুপারহিট হয় ‘খুন ভরি মাঙ্গ’। সেরা পার্শ্বনায়িকা হিসেবে পুরস্কৃত হন সোনু। আশি ও নব্বইয়ের দশকে পর পর বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পান সোনু। তার ফিল্মোগ্রফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘মহাদেব’, ‘তুফান’, ‘ক্লার্ক’, ‘খেল’, ‘ফৌজি’ এবং ‘সাহিবান’। তবে কোনও ছবিতেই সোনু ‘খুন ভরি মাঙ্গের জনপ্রিয়তার কাছে পৌঁছতে পারেননি। বি আর চোপড়ার ‘মহাভারত’ ছবিতে চিত্রাঙ্গদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
পাশাপাশি, দূরদর্শনে ‘বেতাল পঁচিশি’ সিরিয়ালেও দর্শকদের মন জয় করেছিলেন সোনু। ছবিতে সাহসী ও খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করতেন সোনু। ‘আকর্ষণ’ ছবিতে তার একটি চুম্বনদৃশ্য ঘিরে সেসময় যথেষ্ট বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ক্রমশ বলিউডে কাজের সুযোগ কমতে থাকে তার। শেষে বাধ্য হয়ে বি গ্রেডের ছবিতে অভিনয় শুরু করেন সোনু। তারপর এক সময় হারিয়েই যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে। ২০০০ সালে সোনু বিয়ে করেন আমেরিকার হোটেল ব্যবসায়ী ও প্রযোজক সূর্যপ্রতাপ সিংহকে। বিয়ের পরে সোনু থাকতেন মূলত আমেরিকাতেই। কিন্তু ১০ বছরের মধ্যেই সুর কাটল সোনুর দাম্পত্যে। ২০১০ সালে কিডনির অসুখে মারা যান সূর্যপ্রতাপ। স্বামীর মৃত্যুর পরে অনেকটাই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন প্রাক্তন ভারতসুন্দরী। সোনুর মেয়ে এখন আমেরিকাতেই থাকেন। সব দিক সামলাতে সোনুকে মাঝে মাঝেই ভারত থেকে আমেরিকায় যেতে হয়।