শুধু ঘূর্ণিঝড় আম্পানই নয়, বরং এর আগেও অনেক সাইক্লোনের ভয়াবহতা থেকে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছে সুন্দরবন। এই ম্যানগ্রোভ বনটি বাংলাদেশের জন্য প্রকৃতির এক আশীর্বাদই বলা চলে। সুন্দরবন নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। তিনি ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিলেন সুন্দরবনের উপযোগিতা।
১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই বৃক্ষরোপণ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন রেসকোর্স ময়দানে। বঙ্গবন্ধু সেদিন তাঁর ভাষণে কথা বলেছিলেন সুন্দরবন নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, 'আমার মনে আছে, একবার ১৯৬৭-৬৮ সালে তদানীন্তন সরকার যারা ছিলেন, আমি বলেছিলাম, আলাপ হয়েছিল চিঠির মাধ্যমে, আলাপ হয়েছিল যে সুন্দরবনকে রক্ষা করেন, না হলে বাংলাদেশ থাকবে না।'
'তারা বললেন, আমাদের রেভিনিউ নষ্ট হয়ে যায়, প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো, কী করে গাছ কাটা বন্ধ করে দিই? তাহলে চলবে কী করে? আমি তখন বললাম, আমরা গাছ লাগাইয়া সুন্দরবন পয়দা করি নাই। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকৃতি এটাকে করে দিয়েছে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য। বঙ্গোপসাগরের পাশ দিয়ে যে সুন্দরবনটা রয়েছে, এইটা হলো ব্যারিয়ার। এটা যদি রক্ষা না হয় তাহলে একদিন খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লার কিছু অংশ, ঢাকার কিছু অংশ এ পর্যন্ত সব এরিয়া সমুদ্রের মধ্যে চলে যাবে এবং এগুলো হাতিয়া সন্দ্বীপের মতো আইল্যান্ড হয়ে যাবে। একবার যদি সুন্দরবন শেষ হয়ে যায়, তো সমুদ্র যে ভাঙনের সৃষ্টি করবে, সেই ভাঙন থেকে রক্ষার উপায় আর নেই।'
সেই ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আরেকটি কথা, যা আজো অম্লান হয়ে আছে।