এক সময় নাকি নীল চোখের ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও সালমান খানের প্রেমে নিয়ে সরগরম ছিল বলিউড। কিন্তু আজ সবই অতীত। অকারণ সন্দেহ, পরকীয়ার রেশ, গায়ে হাত ইত্যাদি কারণে ভেঙে গিয়েছিল তাদের সেই সম্পর্ক। এখন কথা বলা, মুখ দেখাদেখিও নাকি বন্ধ। ঠিক কী কারণে বিচ্ছেদ হয়েছিল তাদের? এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক বলিউডের আলোচিত কাপলের প্রেমের আখ্যান। তাদের প্রেমটা শুরু হয়েছিল সঞ্জয় লীলা ভন্সালি পরিচালিত ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমার সেটে। সে সময় ঐশ্বরিয়া প্রায় নতুন নায়িকা। খেতাব জিতেছেন ঠিকই, কিন্তু বলিউডে সে ভাবে জমি পাননি। অন্যদিকে, সালমান তখন জনপ্রিয়। কিন্তু সে সময় সালমানের সম্পর্ক ছিল নাকি সোমি আলির সঙ্গে।
কিন্তু ঐশ্বরিয়া এবং সালমানের বার বার সাক্ষাৎ, সময় কাটানো কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি সোমি। তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সোমিও বিদেশে চলে যান। অন্যদিকে, ঐশ্বরিয়া এবং সালমানও আরো কাছাকাছি আসার সুযোগ পেয়ে যান। সালমানের দুই বোন আলভিরা এবং অর্পিতার সঙ্গেও বেশ ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় ঐশ্বরিয়ার। মিডিয়ায় তখন তাদের প্রেমের গুঞ্জন শুরু হয়। সালমানও বলিউডে ঐশ্বরিয়ার অবস্থান শক্ত করতে উঠে পড়ে লাগেন। তিনি কার সঙ্গে কাজ করবেন, কোন ছবি নেবেন সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিতে শুরু করেন সালমান। ঠিক এমনই সময় ঐশ্বরিয়ার কাছে সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘তাল’ ছবির অফার আসে। কিন্তু সুভাষ ঘাইয়ের তার নায়িকাদের সঙ্গে নানা গসিপ আগে থেকেই চালু থাকায় এই ছবিতে তাকে কাজ করতে নিষেধ করেন সালমান। কিন্তু ঐশ্বরিয়াও ছাড়ার পাত্রী নন। তিনি অভিনয় করেন এবং সেই ছবিও বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। কিন্তু ছবির এক প্রিমিয়ার পার্টিতে ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কে খারাপ কথা বললে সুভাষকে চড় মেরে বসেন সালমান খান। সালমান ভাবতেন, এ তো তার অধিকার। ঠিক এমন সময়েই হরিণ শিকার কাণ্ডে নাম জড়ায় সালমানের। শুধু তাই নয়, শোনা যায়, এ সময় নাকি তার সাবেক প্রেমিকা সোমি আলির সঙ্গেও সালমানের আবার কথাবার্তা শুরু হয়। তার বাবার চিকিৎসার জন্য টাকাও পাঠান সালমান। কিন্তু সবটাই ঐশ্বরিয়াকে না জানিয়ে। এদিকে পাল্লা দিয়ে চলছিল সালমানের মদের প্রতি আসক্তি আর ঐশ্বরিয়ার প্রতি অপরিসীম অধিকার ফলানো। একবার নাকি ঐশ্বরিয়ার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি পাগলের মতো দরজা খোলার জন্য চিৎকার করেছিলেন। সে সময় এই ঘটনা শিরোনাম দখল করেছিল অনেক সংবাদমাধ্যমের। ঐশ্বরিয়া দরজা না খুললে তিনি নিজেকে শেষ করে দেয়ার হুমকিও দিতে থাকেন ওই দিন। ঐশ্বরিয়ার বাড়ি থেকেও কিছুতেই এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছিলেন না। একবার এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে চোখে সানগ্লাস পরে পুরস্কার নিতেও ওঠেন ঐশ্বরিয়া। মনে খটকা লাগে উপস্থিত দর্শকদের। ঐশ্বরিয়া বলেছিলেন চোখে ইনফেকশন হয়েছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা বলছিল অন্যকথা।
সালমান নাকি ঐশ্বরিয়ার গায়ে হাত তুলেছিলেন। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরবর্তীতে সে কথা মেনে নিয়েছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড। ঐশ্বরিয়া বলেছিলেন, এক বার নয়, বহু বার তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছেন সালমানের কাছে। যদিও সালমান কখনোই এই অভিযোগ মানেননি। তার কথায়, আমি ইমোশানাল, নিজেকে বহুবার আঘাত করেছি। কিন্তু সুভাষ ঘাই ছাড়া জীবনে কখনো কারো গায়ে হাত তুলিনি। এরপর ‘কুছ না কহো’ ছবিতে ঐশ্বরিয়ার বিপরীতে ছিলেন অভিষেক বচ্চন। শোনা যায়, সালমান নাকি সেই ছবির শুটে গিয়েও সিন ক্রিয়েট করেছিলেন। ভেঙে দিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়ার গাড়ি। অভিষেক থেকে শাহরুখ, প্রায় সব সহ অভিনেতাকে নিয়েই প্রবল সন্দেহ করতেন সালমান। এমন সময় আত্মসম্মান ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল, এই বলেই অবশেষে সম্পর্ক থেকে সরে আসেন ঐশ্বরিয়া। কিন্তু ব্রেকআপ পরবর্তী ট্রমা থেকে কিছুতেই বেরতে পারছিলেন না সালমান। এরপর বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেও তাকেও নাকি হুমকি দিয়েছিলেন সালমান। সে সব অতীত কাটিয়ে ঐশ্বরিয়া এখন বচ্চন পরিবারের বউ। স্বামী অভিষেক এবং কন্যা আরাধ্যাকে নিয়ে সুখের সংসার তার। অন্যদিকে সালমানেরও নাম জড়িয়েছে বিভিন্ন অভিনেত্রীর সঙ্গে। কখনো ক্যাটরিনা কখনো আবার তার জীবনে এসেছেন ইউলিয়া ভন্তুর। শোনা যায়, বর্তমানে ইউলিয়ার সঙ্গেই সম্পর্কে রয়েছেন তিনি।