খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালে দুর্গন্ধ

কালের কণ্ঠ প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২০, ১৪:১০

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দুর্গন্ধযুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন সুবিধাভোগীরা। এই পাবনার ভাঙ্গুড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দুর্গন্ধযুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন সুবিধাভোগীরা। এই চালের রান্না করা ভাত দুর্গন্ধ হওয়ায় অনেকেই খেতে পারেন না। বিশেষ করে শিশুরা এই চালের ভাত কোনোমতেই মুখে তোলে না। এ অবস্থায় অনেক সুবিধাভোগীরা চাল পুকুর মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে সরকারের দেওয়া স্বল্পমূল্যের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চাল বিতরণের পুরোপুরি সুফল ভোগ করতে পারছে না হতদরিদ্ররা। তবে উপজেলা খাদ্য অফিসের দাবি, মিনারেল ও ভিটামিন মিশ্রণের কারণে চালের দুর্গন্ধ ও পাউডারের মতো আবরণ থাকে। এতে খাবারের জন্য অসুবিধা হওয়ার কথা না। জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ বসবাস করে। পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। এর মধ্যে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ২৪০০ পরিবারকে তিনজন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসের স্বল্প মূল্যের চাল সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া ৬টি ইউনিয়নের ৪৬৪৭টি দরিদ্র পরিবারকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হয়। প্রত্যেক ইউনিয়নে দুজন করে ডিলার এই চাল সরবরাহ করে। পৌরসভায় বিতরণকৃত ওএমএসের চাল মোটামুটি খাবার উপযোগী। কিন্তু ইউনিয়নে বিতরণকৃত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল দুর্গন্ধ ও সাদা পাউডারের আবরণযুক্ত। বছরের মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ করা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে মে মাসেও এই কর্মসূচির চাল বিতরণ করা হচ্ছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করেন, মোটা এই চালে বিকট দুর্গন্ধ থাকে। এর ওপর চালে সাদা পাউডারের মতো আবরণ লেগে থাকে। অনেকবার চাল ধোয়ার পরেও ভাত রান্না করলে দুর্গন্ধ যায় না। অভাবের কারণে পরিবারের বয়স্করা এই চালের ভাত কষ্ট করে খেতে পারলেও শিশু-কিশোরদেরকে কোনোভাবেই এই ভাত খাওয়ানো যায় না। তবে অনেকেই চাল খেতে না পেরে পুকুর মালিকদের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে পুকুর মালিকরা সেই চাল কিনে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করেন। এদিকে উপজেলা খাদ্য অফিসের দাবি, উপজেলা খাদ্যগুদামে প্রায় ৯ মাস ধরে এই চাল মজুদ ছিল। তাই কিছুটা গন্ধ হতে পারে। তবে এসব কর্মসূচির চাল ঠিকাদার খাদ্যগুদাম থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিন ও মিনারেল মিশ্রণ করে। তারপরে সেই চাল ডিলারদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে ওই ভিটামিন ও মিনারেলের কারণে গন্ধের তীব্রতা বাড়তে পারে। তবে কিছুটা গন্ধ হলেও অত্যন্ত পুষ্টিকর এই চাল সবারই খাওয়া উচিত। উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ডিলার আনোয়ার হোসেন বলেন, চালে এক ধরনের গন্ধ ও সাদা পাউডারের মতো আবরণ আছে। ঠিকাদার উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে চাল নিয়ে ভিটামিন মিশিয়ে আমাদেরকে দেয়। তাই যেমন চাল পাই তেমনি বিক্রি করি। সুবিধাভোগীরা ভালো চাল চাইলেও আমাদের করার কিছুই নেই।  পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ হেদায়েতুল হক বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ভালো মানের হলে দরিদ্ররা আরো উপকৃত হতো। আমরা চাই ভালো মানের চাল বিতরণ করা হোক। যাতে শিশু-কিশোরসহ পরিবারের সবাই খেতে পারে। কিন্তু ভালো মানের চাল বিতরণ করা না হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো ছাড়া সরাসরি করার কিছুই নেই। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, প্রায় ৯ মাস আগে খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাই কিছুটা গন্ধ ও সাদা পাউডারের মতো আবরণ আছে। তবে পরবর্তীতে  ভালো চাল সংগ্রহ করে সকল কর্মসূচিতে দেওয়া হবে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আইরিন আফরোজ বলেন, খাদ্যগুদামের মজুদকৃত চালে ভিটামিন ও মিনারেল মিশ্রণের কারণে একটু গন্ধ হতে পারে। তবে এটা খুবই পুষ্টিকর চাল। কিন্তু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালে দুর্গন্ধের ব্যাপারে দু-একজন জানালেও ব্যাপক পরিসরে কেউ অভিযোগ করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে  বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us