জেন ক্যাম্পিয়ন
নিউজিল্যান্ডীয় পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার
ডেম এলিজাবেথ জেন ক্যাম্পিয়ন একজন নিউজিল্যান্ডীয় পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার। তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত দ্বিতীয় নারী পরিচালক এবং পাল্ম দর বিজয়ী প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি দ্য পিয়ানো (১৯৯৩) চলচ্চিত্রের জন্য এই সম্মান অর্জন করেন এবং এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ (২০২১) চলচ্চিত্রের জন্য ৭৮তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রৌপ্য সিংহ অর্জন করেন। এছাড়া ক্যাম্পিয়ন অ্যান অ্যাঞ্জেল অ্যাট মাই টেবল (১৯৯০), হলি স্মোক! (১৯৯৮), ও ব্রাইট স্টার (২০০৮) চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য সুপরিচিত।
প্রারম্ভিক জীবনঃ
ক্যাম্পিয়ন ১৯৫৪ সালের ৩০শে এপ্রিল নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ইডিথ ক্যাম্পিয়ন (বিবাহপূর্ব বেভারলি জর্জেট হ্যানা) একজন অভিনেত্রী ও লেখিকা এবং পিতা রিচার্ড এম. ক্যাম্পিয়ন একজন অভিনয়ের শিক্ষক এবং মঞ্চ ও গীতিনাট্য পরিচালক। জেন তার পিতামাতার দ্বিতীয় কন্যা। তার প্র-মাতামহ রবার্ট হ্যানা একজন প্রখ্যাত জুতা প্রস্তুতকারক ছিলেন।
তিনি এবং তার দেড় বছরের বড় বোন অ্যানা ও সাত বছরের ছোট ভাই মাইকেল নিউজিল্যান্ডের মঞ্চজগতের সাথে পরিচিতি নিয়ে বেড়ে ওঠেন। তার পিতামাতা নিউজিল্যান্ড প্লেয়ার্সের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ক্যাম্পিয়ন শুরুতে নাট্যকলায় কর্মজীবন গড়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না। এর পরিবর্তে তিনি ১৯৭৫ সালে ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবনঃ
ক্যাম্পিয়নের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পিল (১৯৮২) ১৯৮৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পাল্ম দর অর্জন করে। এরপর তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্যাশনলেস মোমেন্টস (১৯৮৩), আ গার্ল্স ওন স্টোরি (১৯৮৪), ও আফটার আওয়ার্স (১৯৮৪) নির্মাণ করেন। অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন স্কুল ত্যাগ করার পর তিনি এবিসির হালকা বিনোদনধর্মী ধারাবাহিক ড্যান্সিং ডেজ (১৯৮৬)-এর একটি পর্ব পরিচালনা করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি জ্যান চ্যাপম্যান প্রযোজিত টিভি চলচ্চিত্র টু ফ্রেন্ডস (১৯৮৬) পরিচালনা করেন।
সুইটি (১৯৮৯) দিয়ে তার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনায় অভিষেক ঘটে, যা একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। তিনি নিউজিল্যান্ডীয় লেখিকা জ্যানেট ফ্রেমের জীবনীনির্ভর অ্যান অ্যাঞ্জেল অ্যাট মাই টেবল (১৯৯০) নির্মাণ করে আরও খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি দ্য পিয়ানো (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি অর্জন করেন, এবং এটি ১৯৯৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পাল্ম দর অর্জন করে। তিনি পাল্ম দর বিজয়ী প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা। এছাড়া এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম ইনস্টিটিউট পুরস্কার এবং ৬৬তম একাডেমি পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনার জন্য অস্কারের মনোনয়ন প্রাপ্ত দ্বিতীয় নারী পরিচালক।
তিনি ২০১৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেফনডেশন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র শাখার জুরি সভাপতি এবং ২০১৪ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা শাখার জুরি সভাপতি ছিলেন।
২০১৯ সালে তিনি প্রায় এক দশক পরে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেন। টমাস স্যাভেজের উপন্যাস থেকে নির্মিত দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ ২০২১ সালে ৭৮তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। ক্যাম্পিয়ন এই চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে রৌপ্য সিংহ অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনঃ
ক্যাম্পিয়ন ১৯৯২ সালে কলিন ডেভিড ইংলার্টের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ইংলার্ট দ্য পিয়ানো চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় ইউনিটের পরিচালক ছিলেন। তার প্রথম সন্তান জ্যাসপার ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু মাত্র ১২ দিন বেঁচে ছিল। তাদের দ্বিতীয় সন্তান অ্যালিস ইংলার্ট ১৯৯৪ সালে জন্মগ্রহণ করে। অ্যালিস একজন অভিনেত্রী। ২০০১ সালে ক্যাম্পিয়ন-ইংলার্ট দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
Join Priyo to discover more contents
আরো কন্টেন্ট দেখতে প্রিয়তে যোগ দিন