ড. মোজাম্মেল হক খান। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব। ১ জুলাই, রবিবার মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

১৯৫৯ সালের  ৩ নভেম্বর  মাদারীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মোজাম্মেল হক। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, সিডিসি, মিসর থেকে এসডি (পপুলেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট) ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে লোক প্রশাসন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি বিসিএস ১৯৮২ নিয়মিত ব্যাচে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সদস্য হিসেবে সরকারী চাকুরিতে যোগদান করেন। চাকুরি জীবনে মাঠ পর্যায়ে তিনি সহকারী কমিশনার, ম্যাজিস্ট্রেট, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়-এর সিনিয়র সহকারী সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-এর প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের প্রথমদিকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক এবং ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ নির্বাচন পূর্বসময়ে তিনি জেলা প্রশাসক পদ থেকে প্রত্যাহৃত হন।

এছাড়া তিনি মৎস ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিব, বিএসইসি -এর পরিচালক (অর্থ), তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে সচিব পদে পদোন্নতি পান। এরপর তিনি পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সড়ক বিভাগ, আইএমইডি বিভাগ এবং জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ তিনি সরকারের সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে তিনি জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব-এর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিগত ১১/১২/২০১৬ তারিখ থেকে সিনিয়র সচিব হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

পেশাগত জীবনের বাহিরে তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন। দীর্ঘকাল যাবত তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস এর সাথে জড়িত। স্কাউটস এর মূলমন্ত্রে দীক্ষীত এ কর্মময় মানুষটি বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার। পাশাপাশি তিনি জাইকা এলামনাই এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বৃহত্তর ফরিদপুর চাকুরিজীবী কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশ ক্যারাটে ফেডারেশন-এর সভাপতি। এছাড়া তিনি এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল স্কাউটস এর ‘‘টিকেট টু লাইফ প্রজেক্ট’’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলেন।

বাংলাদেশ স্কাউটস-এর কার্যক্রমে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১। Highest Award of Bharat. Scouts and Guides (Silver Elephant), ২। Highest Award of Bangladesh Scouts (Silver Tiger) ও ৩। Tamarrow Award of the Philippines অর্জন করেন।

তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের অংশ হিসাবে অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, চিলি, চীন, ডেনমার্ক, মিসর, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইনস, রাশিয়া, সৌদি-আরব, সিংগাপুর, স্লোভাকিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামসহ পৃথিরীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।