জনপ্রিয় সবুজ সার হিসেবে পরিচিত ও খড়ির কাজে ব্যবহৃত ধৈঞ্চ্যা চাষে সফল হচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিরা। খরচ কম হওয়ায় ও অধিক ফলনের কারণে অনেকেই ধৈঞ্চ্যা চাষ করছেন। তাদের মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম মারুফ ও বিনোদপুর ইউনিয়নের জালাল উদ্দীন। মোবারক ইউনিয়নের ধৈঞ্চ্যা চাষি নুরুল ইসলাম মারুফ জানান, ম্যানেজমেন্টে বিভাগ হতে মাস্টার্স শেষ করার পরে এক রকম বেকার ছিলাম। চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও ভালো চাকরি মিলেনি। ফলে নিজেদের জমিতে কম খরচে ভালো ফসল উৎপাদনের চিন্তা করে বর্তমানে নিজেদের ঘোড়াদহ বিলে ৩ বিঘা জমিতে ধৈঞ্চ্যার চাষ করেছেন তিনি। তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে ৩ কেজি বীজ লাগে। প্রতি কেজি বীজ ৪০ টাকায় কিনে বপণ করেন। ধৈঞ্চ্যা চাষে বীজ ছাড়া আর কোনো খরচ হয় না। মাত্র ৫-৬ মাসের মধ্যে মাত্র ৩৬০ টাকা খরচ করে বিঘাপ্রতি ধৈঞ্চ্যার খড়ি বিক্রি করে আয় করা যায় ১৫-১৬ হাজার টাকায়। এ ছাড়া কোনো জমি উর্বর না থাকলে গাছগুলো কেটে ওই জমিতে ফেলে পচিয়ে দিলে সর্বোত্তম সবুজ সার হিসেবে উর্বরতা বাড়ায়। তিনি বলেন, অল্পপুঁজিতে ধৈঞ্চ্যা চাষ করে একদিকে যেমন অর্থনৈর্তিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, তেমনি জমির ফসল ফলাতেও প্রধান স্যার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।একই কথা বলেন, বিনোদপুর এলাকার ধৈঞ্চ্যা চাষি জালাল উদ্দীন। তিনি জানান, প্রতি বছর আড়াই থেকে তিন বিঘা জমিতে ধৈঞ্চ্যা চাষ করে সারা বছরে বাড়িতে যে পরিমাণ জ্বালানির দরকার হয় তা এখান হতেই ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন জমির মালিকের কাছে বীজ বিক্রি করেও টাকা আয় করা সম্ভব।এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হোদা বলেন, ধৈঞ্চ্যা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কাজ করছেন। চলতি বছরে জেলায় প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে ধৈঞ্চ্যা চাষ হয়েছে। যা আগামীতে আরও বাড়বে। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকতা এসএম আমিনুজ্জামান জানান, এক বিঘা ধৈঞ্চ্যা চাষ করে ৫ থেকে ৬ মণ বীজ পাওয়া যায়। সে বীজ কৃষকদের কাছে বিক্রি হয় প্রায় এক হাজার টাকা মনে। ফলে ধৈঞ্চ্যা যেমন সর্বোত্তম সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার হয় অন্যদিকে জ্বালানি ও বীজ হতেও অর্থ পাওয়া যায়।