ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত এজাহারভুক্ত ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া তিন আসামিকে ফের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। গতকাল দুপুরে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) জাকির হোসেনের আদালত (আমলী আদালত সোনাগাজী) আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, জোবায়ের আহমেদ ও জাবেদ হোসেনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, নুসরাত হত্যা মামলায় অধিকতর তদন্তের জন্য আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, জোবায়ের আহমেদ ও জাবেদ হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে আসামি জাবেদ হোসেনকে চার দফা, শাহাদাত হোসেন শামীমকে তিন দফা ও জোবায়ের আহমেদকে দুই দফা রিমান্ডে নিলো পিবিআই। গত ১৪ই এপ্রিল আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, ২০শে এপ্রিল জাবেদ হোসেন ও ২১শে এপ্রিল জোবায়ের আহমেদ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল। নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি বোরকার মধ্যে আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম ও জোবায়ের আহমেদের বোরকাটি উদ্ধার করলেও জাবেদ হোসেনের বোরকাটি উদ্ধার করতে পারেনি পিবিআই। তার বোরকাটি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। গত ৬ই এপ্রিল সকালে নুসরাত জাহান রাফি আলিমের আরবি (প্রথম পত্র) পরীক্ষা দিতে মাদরাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা কৌশলে তাকে মাদরাসার সাইক্লোন সেন্টারের ছাদে নিয়ে যায়। পরে তাকে বোরকা পরা দুর্বৃত্তরা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। এ সময় নুসরাত মামলা প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানালে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ দিন পর গত ১০ই এপ্রিল রাতে মারা যায়। পরদিন ১১ই এপ্রিল বিকালে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান গত ৮ই এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় এজাহার নামীয় ৮ জনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। এদের মধ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।