‘জয় বাংলা’ বিতর্কের লাভ-ক্ষতি

বিডি নিউজ ২৪ আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ‘জয় বাংলা’ একটি প্রতীকী স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। মূলত ষাটের দশকের শেষদিক থেকে যখন পূর্ব বাংলায় স্বাধিকার আন্দোলন তুঙ্গে উঠতে থাকে, তখন ‘জয় বাংলা’ হয়ে ওঠে এখানকার মুক্তিকামী মানুষের অন্যতম প্রধান অনুপ্রেরণা। বিশেষ করে ৭০-এর নির্বাচন এবং তার পরপরই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ পরিণত হয় প্রধান স্লোগানে। অনেক গল্প-সিনেমায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এমনকি সাধারণ মানুষের অসংখ্য বীরত্বগাথা উঠে এসেছে।


সেই ‘জয় বাংলা’র পরবর্তী ইতিহাস অন্যরকম। ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া এবং এর জাতীয়করণের ধারাবাহিকতায় এখন এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, আপামর মানুষ ‘জয় বাংলা’র পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে গেছে। অথচ এই স্লোগানটি সাত কোটি মানুষকে একই সূতোয় গেঁথেছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পরে এখন এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে কে ‘জয় বাংলা’র পক্ষে আর কে বিপক্ষে—তা নিয়ে তর্ক হয়। এই যে পরিস্থিতি তৈরি হলো, এর দায় কে নেবে?


কেন সাম্প্রতিক বিতর্ক


‘জয় বাংলা’ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের কারণ হলো ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্ট ২০২০ সালে যে রায় দিয়েছিলেন গত ১০ ডিসেম্বর সেটি স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে গত ২ ডিসেম্বর আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ।


প্রসঙ্গত, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বশির আহমেদের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ২০২০ সালে এর পক্ষে রায় দিয়েছিলেন এবং ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। এরপর ওই বছরের ২ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।



উচ্চ আদালত যে স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করেছিলেন, সেটি স্থগিত করলেন সর্বোচ্চ আদালত। প্রশ্ন হলো, একটি স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণার কী প্রয়োজন ছিল এবং যদি ঘোষণা করা হয়েই থাকে, তাহলে সেটি বাতিল করারই বা কী দরকার? একটি স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান করার জন্য আদালতের শরণাপন্নই বা হতে হলো কেন? এটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেই করা যেতো। শুধু একটি স্লোগান নয়, বরং জাতীয় জীবনের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেই করতে পারে, সেরকম অনেক বিষয় নিয়েই হয় সরকার আদালতে গেছে কিংবা সরকার ও সরকারি দলের পক্ষ থেকে তৃতীয় কাউকে দিয়ে রিট করানো হয়েছে। অর্থাৎ আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সুবিধা নিয়েছে।


বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন


সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ এবং সরকারি দল যে বিচার বিভাগের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে, সেটি ১৯৭২ সালেই টের পেয়েছিলেন সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন কমিটির সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ১৯৭২ সালে গণপরিষদে উত্থাপিত সংবিধান বিলের ওপর তিনি যে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমতসূচক বক্তব্য) দিয়েছিলেন, সেখানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা সম্পর্কিত বিধানে সংশোধনী এনে বলেছিলেন, আইনজীবী হিসেবে ১০ বছর বা তার বেশি প্র্যাকটিস আছে, এমন কাউকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিত হবে না। কেননা এর মাধ্যমে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের সম্ভাবনা থাকে, যার ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মৌলিকত্ব নিশ্চিতভাবেই নষ্ট হয়ে যাবে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে যে ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে যাদের রাজনৈতিক যোগসূত্র আছে, যারা সব সময় ব্যক্তিগত সুবিধার বিবেচনায় পরিচালিত, যারা তোষামোদি ভালোভাবেই রপ্ত করেছে এবং যারা জাতীয় স্বার্থের বিবেচনায় খুব কমই পরিচালিত হয়– এমন ব্যক্তিরাই এই ধরনের নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তিনি চাকরিরত বিচারকদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের সুপারিশ করেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us