ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে। এখন পর্যন্ত গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। কিন্তু জনপ্রত্যাশা পূরণে সংস্কার কাজে অগ্রাধিকার নির্ধারণে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। কেননা শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের সংস্কারকে অগ্রাধিকার তালিকায় স্থান দেওয়া হয়নি।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত একটি সেক্টর। আধুনিক, উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি থাকলেও অতীতের কোনো সরকারই শিক্ষার উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। শিক্ষা খাতকে অব্যাহতভাবে গুরুত্বহীন করে রাখায় সমাজেও শিক্ষা ও শিক্ষকদের মর্যাদা ক্রমাগতভাবে হ্রাস পেয়েছে। তথাকথিত সামাজিক মর্যাদার বুলি আউড়িয়ে আমাদের নীতিনির্ধারকরা শিক্ষকদের সর্বদা বঞ্চিত করে আসছেন। সম্মান আর সামাজিক মর্যাদার লোভে অনেকেই শিক্ষকতা পেশায় এলেও যখন উপলব্ধি করতে পারেন, পেটে খাবার না থাকলে সামাজিক মর্যাদাও পাওয়া যায় না, ততক্ষণে অন্য কোনো পেশা বেছে নেওয়ার সুযোগ আর থাকে না। ফলে তাদের হতাশা, বিষণ্নতা এবং নিজের ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার বেড়াজালে পাঠদানে মনোনিবেশ করা শুধু আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়। এতে জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার শিক্ষার্থীরা যেমন বঞ্চিত হন, একইসঙ্গে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নও দক্ষ জনশক্তির অভাবে বাধাগ্রস্ত হয়।