কৃষকের ঝুঁকি মোকাবিলায় শস্য বিমা চালু হবে কবে?

ঢাকা পোষ্ট ফরিদ খান প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৮

বাংলাদেশের কৃষি অনেকাংশ প্রকৃতি নির্ভর। ভূপ্রকৃতিগত কারণে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রায় প্রতি বছর দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। যার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষি এবং এর সাথে সম্পৃক্ত কৃষক জনগোষ্ঠী।


বাংলাদেশে কৃষিতে বর্তমানে যে ঝুঁকিগুলো তাৎপর্যপূর্ণ তাদের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শস্যহানি অন্যতম। প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের কারণে একদিকে যেমন কৃষির উৎপাদন ব্যাহত হয় অন্যদিকে কৃষকদের আর্থিক ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আশির দশকে দেশে প্রথম শস্য বিমার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেটি নানান কারণে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ তৈরি করতে সক্ষম হয়নি।


শুরুতে যে ধরনের ভর্তুকি বা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন ছিল বাস্তবায়নকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান, সাধারণ বিমা কর্পোরেশন তা নিশ্চিত করতে পারেনি। সরকারি নির্দেশনা মেনে কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও তা সফল হয়নি। তবে বিগত সময়ে সফল না হলেও শস্য বিমা চালুর যৌক্তিকতা কমেনি বরং সাম্প্রতিক সময়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।


সাম্প্রতিককালে আমরা লক্ষ্য করেছি, কৃষি কাজ প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন খরা, অতি বৃষ্টি, বন্যা, অনিশ্চিত আবহাওয়া পরিবর্তন, টর্নেডো এবং নানান রোগ-বালাই প্রভৃতির প্রতি আগের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল। সংবাদপত্রে প্রায়শ দেখা যায় নানান কারণে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।


যেমনটি আমরা লক্ষ্য করেছি, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক বন্যার দেখা দেয় যার ফলে প্রচুর ফসলহানি ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকি আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বাজার ঝুঁকি। এটি খুব দুঃখের যে, বাংলাদেশ প্রধানত কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ হলেও কৃষির উন্নয়ন এবং ঝুঁকি মোকাবিলায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ প্রতীয়মান হয় না।



এটি শুধু কৃষকেরই ক্ষতি নয়, গোটা দেশের ক্ষতি। ফসলের ক্ষতিতে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় যা দেশের সবাইকে প্রভাবিত করে। কৃষকের এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব যদি দেশের সব কৃষককে তার ফসলের বিমার আওতায় আনা যায়। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে শস্য বিমা চালু এবং বাস্তবায়ন করলে কৃষকদের মনোবল দৃঢ় থাকবে এবং আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে তারা রক্ষা পাবে।  


কৃষি বা শস্য বিমা হচ্ছে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা হাতিয়ার যা কৃষককে তার ফসলের উৎপাদন ক্ষতির বিপরীতে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। কৃষি বিমার অধীনে কৃষককে অল্প কিছু অর্থ প্রিমিয়াম হিসেবে কোনো বিমা কোম্পানিকে দিতে হয় যাতে কোনো ঝুঁকি যেমন বন্যা, খরা, রোগ-বালাই থেকে একটি আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।


এই কাভারেজ সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাধারণত একটি শস্য মৌসুম কিংবা বছরের জন্য হয়ে থাকে যেখানে কৃষক ক্ষতির মুখোমুখি হলে কোম্পানি তা পুষিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে। যাতে ক্ষতির ঘটনা ঘটার পূর্বে কৃষক যে আর্থিক অবস্থায় ছিল, ফসলের ক্ষতি হলেও কৃষক সেই অবস্থাতেই ফিরতে পারে।


কৃষকেরা অনেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কিংবা ধারে কৃষি উপকরণ কিনে চাষাবাদ করেন। যখন কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হন, তখন ধার করা অর্থ পরিশোধের সামর্থ্য হ্রাস পায় যা পরবর্তীতে কৃষিতে বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে। সেক্ষেত্রে কৃষি বিমা এই ঝুঁকির হাত থেকে কৃষককে নিরাপত্তা দিতে পারে এবং কৃষি কর্মকাণ্ডকে অটুট রাখতে সহায়তা করে।


অন্যদিকে, কৃষি বিমা চালু হলে কৃষকরা বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ পেতে সক্ষম হবে। দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বছরের পর বছর ধরে কৃষি কাজকে খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করে ঋণদানে বিরত থাকে। বিমা থাকলে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো আর সেটি মনে করবে না এবং কৃষিতে ঋণের প্রবাহ বাড়লে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষকের জীবন যাত্রার মান বাড়বে।


যেসব দেশে কৃষি বিমা চালু হয়েছে সেখানে দেখা যায় এই প্রকল্প থেকে কৃষকেরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছেন। বিমা থাকায় ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে কৃষকরা তাদের কৃষি আয় বৃদ্ধি করতে পেরেছে। তাদের কৃষি উদ্যোগ এবং প্রকল্পগুলো প্রসারিত করতে পারে। যার ফলে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us