ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিজয়ের পর কী পরিবর্তন দেখছেন?
নুরুল হক: গত দু-তিন দশকে গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালিত না হওয়ায় মানুষের মধ্যে হতাশা ছিল। এ পরিবর্তন তাদের আশাবাদী করেছে। নিরাপত্তার পরিবেশ ফিরে এসেছে। অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে ব্যবসা-বাণিজ্য করার চিন্তা করছেন।
রাষ্ট্র সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশন সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
নুরুল হক: যাঁদের নিয়ে কমিশন গঠিত হয়েছে, তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তি। এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই। তবে এই কমিশনে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের রাখলে ভালো হতো। রাজনীতিকেরাই তো দেশ পরিচালনা করবেন। আশা করি, অন্যান্য অংশীজনের পাশাপাশি রাজনীতিকদের মতামত নিয়ে কমিশন রূপরেখা তৈরি করবে এবং সরকার আবার এটি চূড়ান্ত করতে রাজনীতিকদের সঙ্গে বসবে।
সংবিধান নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন সংবিধান বদলাতে হবে। কেউ বলছেন সংশোধন করলেই হবে?
নুরুল হক: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। অনেকে সাম্প্রতিক আন্দোলনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে অভিহিত করেছেন। আমরা মনে করি, স্বাধীনতা একবারই আসে। গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার এত দিন বন্দী ছিল, এই আন্দোলনের মাধ্যমে তার মুক্তি ঘটেছে। বাহাত্তরের সংবিধান কমিটির প্রধান ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সংবিধান নিয়ে আমরা কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, সে সময় স্বাধীনতার নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সামনে রেখে সংবিধান রচিত হয়েছিল। এরপর সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন সংবিধান রচনা করা যেতে পারে।
নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে আপনাদের দলের অবস্থান কী?
নুরুল হক: রাজনীতিতে যদি ভালো মানুষের আসার সুযোগ না থাকে, যদি কোনো বিশেষ শ্রেণির মানুষ বা বিশেষ দল সংসদে আধিপত্য বিস্তার করে, তাহলে দেশের কল্যাণ হবে না। সে ক্ষেত্রে সখ্যানুপাতিক ভোটের ব্যবস্থা চালু হলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। আমরা ৭০ অনুচ্ছেদেরও সংশোধন চেয়েছি। একই সঙ্গে আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথাও বলেছি। রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তাঁর স্বতন্ত্র অবস্থান থাকবে। তিনি দলীয় হবেন না।