ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি: কী হবে কাল?

ডেইলি স্টার আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৪৩

বিচারপতিদের অপসারণ-সম্পর্কিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত (আপিল বিভাগ) যে রায় দিয়েছিলেন, তা রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিল বিগত সরকার—যার ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে আগামীকাল রোববার (২০ অক্টোবর)।


রিভিউয়ে রায় পরিবর্তন হয় কি না—সেটি অনেকগুলো ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে। যেমন: সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানসম্বলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ফিরিয়ে আনতেও আবেদন করা হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে দেশের পাঁচজন নাগরিক রিভিউ আবেদন করেন। এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষেও গত ১৬ অক্টোবর রিভিউ আবেদন করা হয়—যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার পক্ষে বিএনপি ১০টি যুক্তি দিয়েছে। এটিও রোববার আপিল বিভাগে উপস্থাপনের কথা রয়েছে।


সেই হিসেবে ভবিষ্যতে ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের সংবিধান ও বিচার বিভাগের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন হিসেবে হয়তো উল্লিখিত হবে।


প্রসঙ্গত, বিচারপতিদের পদত্যাগ বা অপসারণে দেশে এ মুহূর্তে কোনো আইন নেই। বিগত সরকার সংসদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে ৯৬ অনুচ্ছেদ বদলে দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেটি বাতিল করে দেন।


সরকার এই রায় রিভিউয়ের আবেদন করে। সুতরাং রিভিউতে রায়টি বাতিল হলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে আগের মতো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ন্যস্ত হবে, নাকি অন্য কোনো নির্দেশনা আসবে—সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা কঠিন।



বাহাত্তরের মূল সংবিধানে বিচারকদের অপসারণ সম্পর্কিত ৯৬ অনুচ্ছেদে বিধান ছিল, কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অসামর্থের প্রমাণ পেলে এবং সংসদের মোট সদস্যের অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য ভোট দিলে রাষ্ট্রপতির আদেশে ওই বিচারককে অপাসরণ করা যাবে।


কিন্তু ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। ওই বছরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে চতুর্থ সংশোধনীও কার্যত অচল হয়ে যায়। কেননা ওই সংশোধনীর মাধ্যমে যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল সেটি বাতিল হয়ে যায়। সঙ্গত কারণেই বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাও আর রাষ্ট্রপতির হাতে থাকে না।


এমতাবস্থায় ১৯৭৬ সালের ৮ নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম সংসদ ভেঙে দিলে প্রশ্ন ওঠে, যদি সংসদ না থাকা অবস্থায় কোনো বিচারককে অপসারণের প্রয়োজন দেখা দেয় বা কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগের তদন্তের প্রয়োজন হয়; আবার সংসদ থাকা অবস্থায় যদি দুই-তৃতীয়ংশ সদস্যের সম্মতি না পাওয়া যায়, তাহলে বিচারকদের অপসারণের বিষয়টি কিভাবে মীমাংসা হবে?


এ পরিস্থিতিতে ১৯৭৭ সালের ২৭ নভেম্বর সামরিক ফরমান বলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান করেন জিয়াউর রহমান; পরে যা পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়।


দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থাই বহাল ছিল। এমনকি ২০১১ সালে যখন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাহাত্তরের আদি সংবিধানের চার মূলনীতি ফিরিয়ে আনাসহ সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়, তখনও বিচারপতিদের অপসারণ-সম্পর্কিত ৯৬ অনুচ্ছেদে হাত দেওয়া হয়নি। বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে (২০১১ সালের ২৭ এপ্রিল) বিচারকদের অপসারণ সম্পর্কিত ৯৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন। অর্থাৎ তখনও বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ন্যস্ত রাখার পক্ষেই ছিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর পরেও জিয়াউর রহমানের আমলে করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল থাকে।


কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় এর পরের বছরই। অর্থাৎ ২০১২ সালে হাইকোর্টের একটি আদেশ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন স্পিকার আব্দুল হামিদের একটি রুলিংকে কেন্দ্র করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us