ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই শুরু হয়েছে পুলিশকে ঢেলে সাজানোর কার্যক্রম। রদবদল, পদোন্নতি এবং পদায়নের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার পর এ প্রক্রিয়ায় অধিকতর গতি আসে। ইতোমধ্যেই পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসাবে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব সরফরাজ হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন সরফরাজ হোসেন। পুলিশ সদর দপ্তর এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ভাষ্য-‘পুলিশ প্রশাসনকে আওয়ামী দোসরমুক্ত করে বৈষম্যমুক্ত একটি যুগোপযোগী আধুনিক বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলা হবে। সে লক্ষ্যেই কার্যক্রম চলমান।’ কিন্তু একটি চক্র কৌশলে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এ প্রক্রিয়ায়। তারা জড়িয়ে পড়ছে বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি বাণিজ্যে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সফলও হচ্ছে। এ কারণে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ আমলের সুবিধাপ্রাপ্ত কিছু পুলিশ কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এ পর্যন্ত ৯০৭ জন পুলিশ সদস্যের পদোন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই তাদের পদোন্নতিজনিত পদে পদায়নও করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ সুপার (এসপি) থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা ১১১ জন। আছেন অতিরিক্ত আইজি (গ্রেড-১) একজন, ডিআইজি ৮০ এবং এসপি ৩০ জন। ৬৪ জেলার মধ্যে ইতোমধ্যেই ৫০টি জেলায় নতুন এসপির পদায়ন করা হয়েছে। সব মেট্রোপলিটন পুলিশে দেওয়া হয়েছে নতুন কমিশনার। একইভাবে সব রেঞ্জ অফিসে পদায়ন করা হয়েছে নতুন ডিআইজি। শুধু তাই নয়, কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার ৭৫৩ জন পুলিশ সদস্যকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে গত এক মাসে। এদের মধ্যে কনস্টেবল থেকে নায়েক হয়েছেন ৬৭৭ জন। এছাড়া কনস্টেবল থেকে এটিএসআই পদে ১২ জন, কনস্টেবল/নায়েক থেকে এএসআই ৩১ জন, এএসআই থেকে এসআই ১৮ জন নায়েক থেকে এএসআই (সশস্ত্র) ও এএসআই (সশস্ত্র থেকে এসআই (সশস্ত্র) পদে ১৫ জন এবং এটিএসআই থেকে টিএসআই পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ছয় জন।