মেয়েদের মুখে আবু (আব্বু) ডাক শুনতে অস্থির থাকতেন হাসান মেহেদী। অফিস থেকে ঘরের বাইরে গেলেও বারবার ফোন করতেন ডাক শুনতে। সাত মাস বয়সী মেহেরাশ আধো বুলিতে মাত্র আবু বলে বাবাকে ডাকতে শিখেছিল। জুলাইয়ের ১৮ তারিখ মেহেদী বলেছিলেন, সংবাদ সংগ্রহ করে রাতেই বাসায় ফিরবেন। কিন্তু ফিরেছিল মেহেদীর মরদেহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিকে প্রাণ হারান সাংবাদিক হাসান মেহেদী। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের সংবাদকর্মী মেহেদি গত ১৮ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিতে নিহত হন। এর আগে বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টি ফোরেও কাজ করেছেন।
স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মেহেদী থাকতেন কেরানীগঞ্জে ভাড়াবাড়ির দোতলায়। তিনটি পরিবার মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। প্রতি পরিবারের জন্য একটি করে কক্ষ। কথা ছিল আগস্ট মাসে দুই রুমের একটা বাসায় উঠবে পরিবারটি। কিন্তু দুই কামরার নতুন বাসা আর প্রয়োজন হয়নি। হাসান মেহেদী এখন ঘুমিয়ে আছেন পটুয়াখালীর বাউফলে।
নিহত সাংবাদিক হাসান মেহেদীর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম বলেন, ‘এখন আর আমাদের জন্য কোনো জায়গারই দরকার নেই। আমার সন্তানের বাবা শুয়ে আছে মাটিতে। এক রুমের সেই ঘরের স্মৃতিই বোঝা হয়ে গিয়েছে। বাসা ছেড়ে দিয়ে সন্তানদের নিয়ে চলে এসেছি বাবার বাড়িতে।’