ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই একের পর এক থানায় হামলা করা হয় দেশব্যাপী। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ পুলিশ সদস্য। এতে ভেঙে পড়ে পুলিশের মনোবল। অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া এই বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। কাজে যোগ দেননি অনেক পুলিশ সদস্য। থানাগুলো চালু হলেও আগের মতো মামলা গ্রহণ ও আসামি ধরতে অভিযান চালাচ্ছে না পুলিশ। এতে ভোগান্তি বাড়ছে ভুক্তভোগী মানুষের। তবে পুলিশ সদস্যরা বলছেন, মাঠে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও হেনস্তার ভয়ে কাজে আসতে সাহস পাচ্ছেন না বাহিনীর অনেক সদস্য। অনেকেই আবার মামলার ভয়ে পালিয়ে রয়েছেন।
৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় পুলিশকে শাসানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, থানায় মোটরসাইকেলে বসা এক ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে ছয়জন তরুণ। তাদের মধ্যে নীল পাঞ্জাবি পরিহিত এক যুবক মোটরসাইকেলে বসা ওই ব্যক্তিকে শাসানোর সুরে বলতে থাকে, ‘আজকের মধ্যে গ্রেপ্তার না করা হলে, এই থানা আবারও ঘেরাও করব। এই থানায় কেউ থাকতে পারবে না। ৫ আগস্টের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা হবে।’ পরে জানা যায়, মোটরসাইকেলে বসা ওই ব্যক্তি কক্সবাজার সদর থানার এসআই মো. মামুন। আর তাঁকে যিনি হুমকি দিচ্ছেন, তাঁর নাম রিয়াদ মনির। তিনি কক্সবাজারের সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
পুলিশ সদস্যকে হেনস্তা ও হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াদ মনির বলেন, ‘এটা হুমকি না, আমার আচরণটা বিপ্লবী ছিল, অছাত্রসুলভ ছিল। এ জন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করছি। তবে আওয়ামী লীগ আমলে যেভাবে আসামি ধরা হতো, এখন তা হয় না। আমাদের ভাইকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু আসামি ধরছে না পুলিশ। তাই থানায় গিয়েছিলাম।’
শুধু কক্সবাজার নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই প্রতিদিন এভাবে শত শত মানুষ পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছেন; কিন্তু পুলিশের তৎপরতা না দেখে হতাশ হতে হচ্ছে তাঁদের। কেউ কেউ দেখাচ্ছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
মানুষের ক্ষোভের কারণে পুলিশের অনেকে এখনো ব্যাগে ইউনিফর্ম লুকিয়ে থানায় যান, আবার থানা থেকে ব্যাগে করে ইউনিফর্ম নিয়ে বাসায় ফেরেন। নিয়মিত টহল এখনো শুরু হয়নি।