সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মিছিলটি যখন পার্কের মোড়ে যায়, তখন সবার সামনে ছিলেন আবু সাঈদ। পুলিশের বাধার মুখে অন্যরা সরে গেলেও আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে যান। একা নিরস্ত্র প্রতিবাদী এই তরুণকে একের পর এক গুলি করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
শুধু রংপুর নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বিচার গুলি করেছে। এর মধ্যে অন্তত তিন শ্রেণির প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করার তথ্য পাওয়া গেছে। ১৬ জুলাই থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন পর্যন্ত যে বিপুলসংখ্যক মানুষ হতাহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৭৫৮ জনের নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের বেশির ভাগই নিহত হয়েছেন প্রাণঘাতীর অস্ত্রের গুলিতে। বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির হিসাবে ৭০ শতাংশ মৃত্যুই হয়েছে গুলিতে।
রংপুরে আবু সাঈদকে গুলির ওই ঘটনার দুটি ভিডিও যাচাই করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব। সংস্থাটি জানিয়েছে, স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার করে তারা দেখেছে, ১৫ মিটার দূর থেকে আবু সাঈদকে গুলি করা হয়। সাঈদ তখন পুলিশের জন্য কোনো হুমকির কারণ ছিলেন না। আপাতদৃষ্টে ওই গুলির ঘটনা ইচ্ছাকৃত ছিল।
এ রকম আরও ছয়টি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছে তথ্য যাচাইকারী বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তাতে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ প্রয়োগের মতো পরিস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।