রোজিনাকে বলেছিলাম, শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় সত্য

প্রথম আলো আনিসুল হক প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪১

রোজিনা ইসলামকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর পর প্রথম আলোয় একটা লেখা লিখেছিলাম: শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় সত্য। রোজিনা ইসলাম আমাদের চ্যাম্পিয়ন সাংবাদিক। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর একেকটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে, আর সারা দেশে প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবার। করোনার সময়েও স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি বিষয়ে করা রোজিনা ইসলামের প্রতিবেদনগুলো ছিল বলিষ্ঠ, বস্তুনিষ্ঠ এবং ক্ষমতাসীনদের জন্য একেকটা তীব্র তির।


১১ এপ্রিল ২০২১ রোজিনার স্বাস্থ্য খাত নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: এখন এক কোটি দেব, পরে আরও পাবেন।


খবরের প্রতিপাদ্য ছিল: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বড় একটি নিয়োগে বড় অঙ্কের ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন নিয়োগ কমিটিরই দুজন সদস্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে তাঁরা দাবি করেছেন, এই নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থীদের একটি অংশের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।



ওই সময় তাঁর আরেকটা প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: ৩৫০ কোটি টাকার জরুরি কেনাকাটায় অনিয়ম। যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করেছিল, তাদের অনেকের সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি পর্যন্ত হয়নি। অনিয়মের কথা জানিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিএমএসডির পরিচালকের চিঠি। তদন্ত হলেও এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েই ২০২১ সালের ১৭ মে রোজিনা ইসলাম গিয়েছিলেন তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। তাঁকে সেখানে নিগৃহীত করা হয়। আটকে রাখা হয়। সতীর্থ সাংবাদিকেরা প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন। সারা দিনেও তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন তাঁকে নেওয়া হয় সিএমএম আদালতে।


রোজিনাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। প্রায় এক সপ্তাহ কারাগারে থাকার পর ২৩ মে ২০২১ রোজিনা জামিন পান। ফিরে এসে কারাগারের ভেতরের অভিজ্ঞতা নিয়েও রোজিনা সাহসী লেখা লিখেছেন। আর দেশে-বিদেশে সাংবাদিকতার জন্য পেয়েছেন অনেক বড় বড় পুরস্কার। ‘সেরা অদম্য সাহসী’ হিসেবে ২০২১ সালে ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। 



নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক সংস্থা ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড তাঁকে ‘ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ দিয়েছে। সাংবাদিকতার মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভূমিকা রাখার জন্য ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর রোজিনা ইসলামকে অ্যান্টিকরাপশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড দেয়। প্রথম আলো তাঁকে দিয়েছে লতিফুর রহমান পুরস্কার।


 রোজিনা আমাদের অপরাজেয় স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতীক। কিন্তু একজন নারী সাংবাদিকের জীবন মোটামুটি দোজখ বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হতো আদালতে। তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।


মাত্র কয় দিন আগে, ১৪ জুলাই ২০২৪ তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে রোজিনার বিরুদ্ধে অনেক কটুকথা বলেন, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন, একটা বড় দেশ তাঁকে যে বড় পুরস্কার দিয়েছে, তা নিয়েও বিদ্রূপ করেন। সে রাতেও রোজিনা মুষড়ে পড়েছিলেন ভেতরে-ভেতরে। কিন্তু বাইরে থেকে কাউকে বুঝতে দেননি।


প্রায় তিন বছর তিন মাস পর রোজিনা সেই মামলা, হয়রানি, তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হলেন। ১৪ আগস্ট সকালেই আইন উপদেষ্টা ঘোষণা দেন রোজিনা ইসলামের মতো দৃষ্টান্তমূলক মিথ্যা মামলাগুলো তুলে নেওয়া হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us