'শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি' এবং 'সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী' বলে দাবি করেছেন তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে, তার এই দাবি সম্পূর্ণ অমূলক এবং ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়ের এমন দাবির বিষয়ে জানতে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সংবিধান বিশেষজ্ঞ আরিফ খানের সঙ্গে।
'শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি'—এই দাবি প্রসঙ্গে আরিফ খান বলেন, 'বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী দুটি ক্ষেত্র ছাড়া বাকি সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির আলাপ-আলোচনা গোপনীয়তার মধ্যে হয়। কাজেই তারা গোপনীয়তা রক্ষা করে কী আলোচনা করেছেন, তা তারাই জানেন। তাদের মধ্যে একজন যখন বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তখন সেটাই গ্রহণযোগ্য ও চূড়ান্ত।'
'কাজেই সাংবিধানিকভাবে শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী আছেন—এটা মোটেই যুক্তিযুক্ত কথা নয় এবং পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও অমূলক দাবি। এটা আর আলোচনারই বিষয় নেই,' যোগ করেন তিনি।
আরিফ খান বলেন, 'গণঅভ্যুত্থান বা যুদ্ধ মুহূর্তে পদত্যাগের অর্থ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করা না। সংবিধানেও বলা নেই যে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাবেন বা পদত্যাগপত্র জমা দেবেন রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি যখন বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তখন তার পদত্যাগের প্রমাণ হিসেবে এই ঘোষণাই যথেষ্ট ও চূড়ান্ত। সেখানে কোনো লিখিত পত্র দেওয়া হয়েছে কি না সেটাও দেখার প্রয়োজন নেই।'
পরিবর্তীতে পরিস্থিতিতে যা হচ্ছে বা হয় তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে হবে কিন্তু সংবিধানের মধ্যে থেকে করতে হবে তা অপরিহার্য না উল্লেখ করে আরিফ খান বলেন, 'সংবিধানে বলা না থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান এক ধরনের কর্তৃত্ব নিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ও ছাত্ররা এক ধরনের কর্তৃত্ব নিয়েছেন। এই তিন কর্তৃত্ব নিয়ে এক ধরনের কাঠামো তৈরি হয়েছে। সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির আদেশে। কিন্তু বর্তমান সংবিধানে এমন কোনো বিধি নেই। কিন্তু, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি এটা করতে পরেন, যা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই রয়েছে।'