ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। শোবিজ তারকারা কী ভাবছেন নতুন করে তৈরি হতে যাওয়া বাংলাদেশ নিয়ে, কী তাঁদের প্রত্যাশা অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের কাছে?
একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সময়
—সিয়াম আহমেদ, অভিনেতা
দেশটা এখন অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উন্নয়নের পথগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, লুটপাট করা হয়েছে। আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। এখন যদি আমাদের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ করি, তাহলে আমাদের পিছিয়ে যাওয়াটা আরও দীর্ঘায়িত হবে। এখন পেছানোর সময় নয়, একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সময়।
মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণে এগিয়ে যাব
—মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্মাতা
আমাদের এখানে একটা গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। এখন আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন—এগুলোকে সংস্কারের ব্যবস্থা করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাওয়া। এই সরকারের প্রথম কাজ হবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা।
এই সরকার যেন আমাদের স্বপ্নের দিকে নিয়ে যায়
—রায়হান রাফী, নির্মাতা
দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক হোক, মানুষ শান্তিতে ঘুমাক। পুলিশ কাজে ফিরুক, শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে ফিরে যাক, মানুষ শান্তিতে অফিস করুক, ব্যবসা-বাণিজ্য করুক। মানুষ যেন দ্রুত স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারে। আর যেন কোনো দুর্নীতি না হয়। আমরা সবাই যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, এই সরকার যেন সেই স্বপ্নের দিকে নিয়ে যায়। রাজনীতির ওপর মানুষের যে অশ্রদ্ধা জন্ম নিয়েছে, সেটা যেন দূর হয়।
শিল্পচর্চায় সেন্সরশিপ চাই না
—আশফাক নিপুন, নির্মাতা
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার দাবি থাকবে মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার। গণমাধ্যম আসলে জনগণের কথা বলে। কিন্তু আমরা দেখেছি, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যমকে হয় ভয় দেখিয়ে, না হয় সুবিধা দিয়ে নিজেদের দিকে নিয়ে গেছে সরকার। হাতে গোনা কয়েকটি গণমাধ্যম ছাড়া সবাই লেজুড়বৃত্তি সংবাদ পরিবেশন করেছে। একটা সাম্যবাদী সরকার গঠনের যে স্বপ্ন দেখছি, তা পূর্ণতা পাবে যদি মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করা যায়।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে
—সাবিলা নূর, অভিনেত্রী
দেশের অনেক জায়গায় নৈরাজ্য চলছে। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সব ধর্মের, সব বিশ্বাসের মানুষ যেন প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে পারে, তার জন্য সমতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ভিন্নমতের হলেই কাউকে যেন কুক্ষিগত করে না রাখা হয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। সবাই যেন নিজেদের কথা স্পষ্টভাবে বলতে পারে।