১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিধান নৈতিকতাবিরোধী

বণিক বার্তা অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১১:১০

জাতীয় সংসদে পাস হয়ে গেল ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। অর্থনীতির একটা অস্বস্তিকর এবং পীড়াদায়ক পরিবেশে দেশের নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি সংসদের অনুমোদনের জন্য বাজেট পেশ করেছিলেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে হয়তো তিনি নতুন কিন্তু অর্থনীতির শিক্ষক, কূটনীতিক, সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অভিজ্ঞতায় তিনি প্রাংশু। এবার অন্তত অতীতের দু-একটা ‘ব্যবসায়ীবান্ধব’ বাজেট থেকে অর্থমন্ত্রী সরে এসেছেন বলে মনে হয়; তা যে কারণেই হোক। 


দুই.


গেলবারের তুলনায় এবারের বাজেটের আকার তুলনামূলক কম অথচ করোনার আগ পর্যন্ত বাজেটের আকার বেড়েছিল ১০-১২ শতাংশ হারে। মূলত দুটো কারণে বাজেটের আকার ছোট রেখে তিনি প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। প্রথমত, ব্যয় নির্বাহের জন্য অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের অবকাশ ক্রমে সংকুচিত হয়ে আসছে; দ্বিতীয়ত, মূল্যস্ফীতি বা বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সব ধরনের ব্যয় কমাতে হবে। বিশেষত যখন অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির অন্যতম শক্ত নিয়ামক। সন্দেহ নেই যে, এতে করে প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস পাবে। তবে আপাতত উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের দিকে মনোনিবেশের পরিবর্তে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের দিকে মনোনিবেশ করেছেন বলে মনে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হলে এর বিকল্প নেই। তবে এও ঠিক যে, আমরা আশা করেছিলাম অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলবেন কেন অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এলেও বাংলাদেশে তা অধরা রয়ে গেল; বিশেষ করে আমরা জানতে আগ্রহী ছিলাম কেন বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা যথাযথভাবে কাজ করছে না বা পাস থ্রু এফেক্ট দুর্বল কী জন্য। 


তিন. 


সংসদে যে বাজেট অনুমোদিত হয়েছে, আশা করব সে বাজেটে খাদ্য উৎপাদন, সামাজিক সুরক্ষা, কৃষিতে ভর্তুকি এবং জ্বালানি, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ‘প্রকৃত’ বরাদ্দের বৃদ্ধি বাস্তবায়নে যথাযথ মনোযোগ দেয়া হবে। সরকারের দেয়া ভর্তুকির সিংহভাগ রাঘববোয়াল ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরা চেটেপুটে খায় বলে অভিযোগ আছে। সুতরাং পুরো ভর্তুকি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি, যাতে করে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র এবং দুর্বলের কাছে প্রবেশগম্যতা পায়। 


এ অঞ্চলে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম—এটা এমনকি আমজনতার ধারণা। এবার সে স্থবির অনুপাত টপকে যাওয়ার লক্ষ্য ঘোষণা প্রশংসনীয়, তবে পথ ও পাথেয় নিয়ে বিতর্ক আছে। গবেষকরা বলছেন, করজাল বিস্তৃত করে, আয়কর বাড়িয়ে পরোক্ষ করের চাপ কিছুটা হলেও লাঘব করা যায়। 


চার.


নীতিগত বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতি তো আছেই এবং তা জানা দরকার। প্রায় দুই বছরের ব্যবধানের পর অবশেষে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থা এবং মুদ্রানীতিকে যথাস্থানে রাখা হয়েছে সমন্বয়ের মাধ্যমে। এ সাহসী নীতিগত সিদ্ধান্ত ভালোভাবে বাস্তবায়ন হলে মুদ্রাস্ফীতি কমাতে এবং বিনিময় হার স্থিতিশীলে সাহায্য করবে বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ।


সমন্বয় প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ হলো রাজস্ব নীতি সমন্বয়ের সঙ্গে এ নীতি সংস্কারের কার্যকারিতা বাড়ানো। কেননা মুদ্রাস্ফীতি কমাতে রাজস্ব নীতি সংস্কার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্ব সংক্রান্ত সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করা খুব সহজ। যেমন মূল্যস্ফীতি কমাতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমানো প্রয়োজন। এটি করতে হলে স্বভাবতই মোট ঋণের প্রবৃদ্ধি হ্রাস করার দিকে ইঙ্গিত আসে। ধর্তব্য যদিও ঋণের মোট চাহিদায় বেসরকারি খাতের প্রাধান্য রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে সরকারি খাতও ঋণের বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সুতরাং ব্যক্তি খাতে ঋণ কমালেই মূল্যস্ফীতি কমবে সেটা মনে করা বোধ হয় ঠিক নয়। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us