চাকরি ছেড়ে সফল খামারি

আজকের পত্রিকা শাইখ সিরাজ প্রকাশিত: ০৪ জুন ২০২৪, ১১:২৭

একটা সময় তর্ক ছিল—‘খাঁটি গরুর দুধ’ নাকি ‘গরুর খাঁটি দুধ’। সেই আশির দশকে টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে গিয়ে শিখেছি এবং শিখিয়েছি যে গরুটা তো খাঁটিই, দুধে পানি মেশানোর জন্য বলা হতো ‘দুধটা খাঁটি না’। অর্থাৎ দুধের খাঁটিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু সময়ের স্রোতে এখন ‘গরু’টা খাঁটি কি না, সেটা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে।


শুধু তা-ই নয়, ‘খাঁটি’ শব্দটিই যেন এখন বহু দূরে অবস্থান করছে। কোন পণ্যটি খাঁটি আর কোনটি নয়, সেটা খুঁজে পেতে বিশ্বাসের ওপর ভর করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। খাঁটির প্রশ্নে সারা দেশের মানুষেরই বিশ্বাস প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। কারণ, এখন খাঁটি যত দ্রুত হাঁটে, ভেজাল হাঁটে তার চেয়ে দ্রুত।


যাহোক, এই ঢাকা শহরে মানুষের ঘরে খাঁটি দুধ পৌঁছে দিতে বহুসংখ্যক দুগ্ধখামার গড়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও গড়ে উঠেছে খামারপল্লি। এমনকি তিনতলা ফ্ল্যাট বাড়িতেও গরুর খামার গড়ে তোলা হয়েছে। ভোক্তা বা ক্রেতাকে সামনে দাঁড় করিয়ে দুধ দোহন করা হয়। ভোক্তা চোখ-কান খোলা রেখে খাঁটি দুধ খরিদ করেন। সেখানেও থেকে যায় দু-এক কথা। ওই সব গাভির খাদ্যের উপকরণ ও মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। খাদ্যের ভেজাল-খাঁটির ওপরও নির্ভর করে দুধের শুদ্ধতা।


এই ভেজালের ভিড় ঠেলে কেউ কেউ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ‘খাঁটি পণ্য’ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। এমন একজনের সন্ধান পেয়েছিলাম বছর তিনেক আগে। তাঁর নাম মকবুল হোসেন। ছিলেন প্রকৌশলী। নামকরা প্রতিষ্ঠানের চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পেতেন লাখ টাকা বেতন। স্ত্রী শিক্ষক। বেশ সচ্ছলতায় দিন কাটছিল তাঁদের। একদিন শিশুসন্তানের জন্য কেনা দুধের মধ্যে পেলেন চিংড়ি!


টনক নড়ল মকবুলের। সন্তানের পাতে যদি নিরাপদ খাদ্য তুলে দিতে না-ই পারলেন, তবে সচ্ছলতা কিসের? চারটি গাভি কিনে নিজেই খামার গড়তে শুরু করলেন। চাকরি ছেড়ে নিজের জন্য তো বটেই, যতটা পারেন অন্য মানুষকেও খাঁটি পণ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করলেন।


মকবুল হোসেনের খামারের অভিজ্ঞতা ১১ বছরের। এই ১১ বছরে তিনি আয়োজন করেছেন দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল-ভেড়া পালন, সরিষার খাঁটি তেল-ঘি উৎপাদনসহ নানা রকম উৎপাদনমুখী কৃষি কার্যক্রম। চারটি গাভি থেকে এখন তাঁর খামারে শতাধিক গাভি। না, চারটি গাভির পর তিনি আর গাভি কেনেননি। সেই চারটি থেকেই বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে গাভির সংখ্যা বেড়েছে।


প্রতিদিন দুধ পাওয়া যায় হাজার লিটারের বেশি। সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুধ প্যাকেটজাত করে পৌঁছে দেন তালিকাভুক্ত ক্রেতাদের ঘরে ঘরে। সবচেয়ে ইতিবাচক বিষয়টি হলো, দুধের এই বাজার তিনি নিজে গড়ে তুলেছেন, যাকে বলা যেতে পারে কমিউনিটি মার্কেটিং।


আজকের দিনে এই উদ্যোগ অনেকে গ্রহণ করছে। সম্প্রতি হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে একটি প্রতিবেদনে প্রচার করেছিলাম গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত একটি পোলট্রি খামার নিয়ে। খামারটি গড়ে তুলেছেন কম্পিউটার প্রকৌশলী ইমরুল হাসান। তিনিও শতভাগ শুদ্ধতার শর্ত মাথায় রেখেই তাঁর বাণিজ্যিক উদ্যোগকে এগিয়ে নিচ্ছেন। ভোক্তার চাহিদা নিরূপণ করে বাজারটি তিনি নিজেই গড়েছেন। তাঁর উদ্যোগটিও ভোক্তার ঘরে অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত মুরগির মাংস পৌঁছে দেওয়ার।


যাহোক, প্রকৌশলী মকবুল নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে রপ্ত করেছেন অনেক কিছু। খাঁটি দুধ উৎপাদনের পূর্বশর্তই হচ্ছে গাভিকে পুষ্টিকর ও ভেজালমুক্ত খাদ্য খাওয়ানো। এ ক্ষেত্রে অন্যতম পুষ্টিকর উপাদান হলো মানসম্মত সরিষার খৈল। গাভির জন্য সরিষার খৈল সংগ্রহ করতে মকবুল হোসেন স্থাপন করেন তেল উৎপাদনের ঘানি। সেখানে তিনি উৎপাদন করছেন সরিষার তেল। যদিও তা বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us