জন্মের পর ৩৫-৩৬ বছর বয়স পর্যন্ত আমি যে চালের ভাত খেয়ে বেঁচেছি, তা খুব সরু নয়, আবার মোটাও নয়। মাঝারি ধরনের চাল। আমাদের সুনামগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকার ধনী, গরিব, মধ্যবিত্ত সবাই তখন এক রকম চালের ভাত খেত। টেপি ধানের আতপ চাল। চালগুলো গোল ধরনের হলেও ভাত হতো একটু লম্বা ও চিকন। বেশ সুগন্ধি আর সুস্বাদু এই ভাত চাইলে খালিও খাওয়া যেত।
তবে ভাটির দেশ সুনামগঞ্জের আরও ভাটি এলাকা দিরাই-শাল্লার লোকেরা এখনকার ২৮-২৯ ধানের থেকেও মোটা ইরি ধানের সেদ্ধ চালের ভাত খেত বলে শুনেছি। একবার এ রকম একটা এলাকায় বেড়াতে গিয়ে খেতে বসে বেশ কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু ওই এলাকার মানুষ—সচ্ছল বা অসচ্ছল সবাইকে অনায়াসে পরমানন্দে সে ভাতই খেতে দেখেছিলাম। হয়তো অভ্যাস, আর কথায় তো আছেই—মানুষ অভ্যাসের দাস! তা যে সময়ের কথা আমি বলছি, সেই সময় ধনী মানুষেরাও আজকের মতো এত বিলাসী জীবনযাপন করত না। কৃষক যাঁরা, তাঁরা তো নয়ই। তাঁরা মোটা ভাতের সঙ্গে তাজা মাছের ঝোল খেয়েই তৃপ্ত ছিলেন।