চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্বৃত্তায়নমুক্ত ছাত্র রাজনীতি চাই

যুগান্তর মাহমুদুর রহমান মান্না প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২২

ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এবং সে দাবি উঠেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েট থেকে। সেখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধই ছিল গত চার বছর।


হঠাৎ করে ২৭ মার্চ রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগের এক বিশেষ শোডাউন হয়। অনেক হোন্ডা নিয়ে ছাত্রলীগের বেশ বড় এক বহর বুয়েট ক্যাম্পাসে ঢোকে। তারা বেশ কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে এবং সংগঠনিক তৎপরতা চালায়। প্রতিবাদে ২৯ তারিখ দুপুরের পর বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা শহিদ মিনারে সমাবেশ করেন। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্রলীগের এ ধরনের সমাবেশ করার বিরুদ্ধে তারা বক্তব্য রাখেন। তারা জানতে চান, এ গভীর রাতে তাদেরকে বুয়েটের প্রধান সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিল কারা?


যারা বহাল থাকা ছাত্র রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ কাজ করেছে তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা। ধীরে ধীরে তাদের সমাবেশ বিশাল আকার ধারণ করে। বলা যায়, বুয়েটের নিরঙ্কুশ সংখ্যক শিক্ষার্থী এতে যোগ দেন। তারা নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার পক্ষে বক্তব্য রাখেন। অপরদিকে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ছাত্র রাজনীতি শুরু করার দাবি জানায়। মিডিয়াগুলো যে যেভাবেই খবর প্রকাশ করুক, বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা যত যুক্তিই দেখান না কেন, এটা দৃশ্যমান যে বুয়েটের নিরঙ্কুশ সংখ্যক শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার পক্ষে।


সমস্যাটা সেখানেই। যে দেশের রাজনীতির ইতিহাসের এক বিরাট অধ্যায়জুড়ে রয়েছে ছাত্র রাজনীতি, সেই দেশে মেধাবীদের প্রতিষ্ঠান বলে পরিচিত বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দিতে বলছেন! দেশের আপামর মানুষকে, বিশেষত বুদ্ধিজীবী মহলকে আমি বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবার জন্য অনুরোধ করব। কেন এমন হলো?


আমার ছাত্রজীবনে রাজনীতি করার সময় বহুবার আমি বুয়েটে গেছি। হলে হলে সভা করেছি। বুয়েট হাসানুল হক ইনু, শরিফ নূরুল আম্বিয়ার মতো ছাত্র ও জননেতা তৈরি করেছে। এদেশের স্বাধীনতার অন্যতম চিন্তক জননেতা সিরাজুল আলম খান বহুদিন আহসানুল্লাহ হলে থেকেছেন। আমার কাজের সময় আমি বুয়েটের শিক্ষার্থীদের রাজনীতির প্রতি, বা যাদের কথা বললাম তাদের প্রতি কোনো নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বা আচরণ দেখিনি। আজ কেন তারা এরকম অবস্থান নিল? এ জন্য আমাদের অতীতের দিকে তাকাতে হবে। সেই অতীত বানিয়ে আমি কেবল ’৫২, ’৬০, ’৬২, ’৬৯ বা এরশাদ আমলের গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র আন্দোলনের কথা বলছি না।


আমাদের নিকট অতীত যদি আমরা এরশাদ শাসনের অবসানের পর থেকে তথা ’৯০-এর পর থেকে বিশ্লেষণ করতে থাকি, তাহলে দেখব আজ পর্যন্ত এদেশে সেই অর্থে কোনো ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। সেই অর্থে বলতে আমি রাজনীতি বোঝাতে চাইছি। এরশাদ সরকারের পতনের পর থেকে আজ পর্যন্ত বড় বড় গোটা চারেক আন্দোলনের কথা বলতে পারি আমরা। প্রথমত, গণজাগরণ মঞ্চ। এটা অবশ্য ঠিক ছাত্র আন্দোলন নয়। কিন্তু ছাত্রদের অংশগ্রহণই এ আন্দোলনকে ভিত্তি দিয়েছিল এবং ছাত্ররা এর শেষ পর্যন্ত ছিল।


অতঃপর আমরা ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে দেখতে পারি। সচেতন মানুষ মাত্রই খেয়াল করবেন এর কোনোটিকেই আমরা রাজনৈতিক আন্দোলন বলে চিহ্নিত করতে পারব না। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন অবশ্য শুরুতে রাজনৈতিক চরিত্রের বলেই মনে হয়েছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা কেবল একটি ফাঁসি অর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বলা যায়, এসব আন্দোলনে সরাসরি রাজনৈতিক দলীয় নেতৃত্ব ছিল না। যারা আন্দোলন করেছেন, তারা স্পষ্টতই রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যক্তিত্বকে দূরে রেখেছেন। সেটা কোনো লুকোছাপা করে নয়। রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us