কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে শত বছর ধরে তিলে তিলে জেগে ওঠা চর বাকলিয়ার জংলা বনে গড়ে উঠেছে হাজারো পাখির অভয়ারণ্য। সেই চরের একটি অংশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্ল্যান্ট করতে চায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, যা ভয় জাগাচ্ছে পরিবেশবাদীদের মনে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলছেন, ওই চরে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি নির্মাণ করবে একটি চীনা কোম্পানি। আর সিটি করপোরেশন জমি দেবে এবং বর্জ্য সরবরাহ করবে।
সেজন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই চরের ৩৫ একর জমি বরাদ্দ চেয়েছে সিটি করপোশেন। তবে ভূমি মন্ত্রণালয় এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, মানুষের বসতিহীন ওই চরে রয়েছে ১৫৫ প্রজাতির উদ্ভিদ; যার মধ্যে ১১৩টি ওষুধি প্রজাতির। হাজার হাজার গাছে ঘেরা এই চর হয়ে উঠেছে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়।
সেখানে আছে বিপন্ন প্রজাতির কালো মাথা কাস্তেচরা, লাল লতিকা হট্টিটি, সাদা বক, গো-বক, কয়েক প্রজাতির মাছরাঙার মত নানা প্রজাতির পাখি। মৌসুমে অনেক অতিথি পাখিও আসে। স্থানীয়রা প্রতিদিন চড়ানোর জন্য চরে নিয়ে যান শত শত মহিষ।
সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট করলে কর্ণফুলী নদী ‘মারাত্মক হুমকিতে পড়বে’ এবং চরের উদ্ভিদ ও জীব বৈচিত্র্য ‘ধ্বংস হয়ে যাবে’ বলে পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা। সে কারণে তারা প্রকল্পটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, চট্টগ্রামের মূল ভূখণ্ড থেকে বার্জে করে চরে বর্জ্য পরিবহন করতে গিয়ে যদি তা নদীতে ছড়ায়, তাহলে উজানের হালদা নদীও দূষণের কবলে পড়বে। তাতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান কার্প জাতীয় মাছের এই প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্রও ক্ষতির মুখে পড়বে।