তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সদ্য এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, যেটাকে বিশ্লেষকেরা দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে তাঁর জন্য সবচেয়ে খারাপ রাজনৈতিক ধাক্কা বলে বিবেচনা করবেন।
রোববার অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাঁর জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) বিশাল পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে। গত বছর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে শক্ত মুঠোতে ক্ষমতা সংহত করার পর স্থানীয় নির্বাচনে এ পরাজয়কে বিস্ময়করই বলা যায়।
বিরোধী রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) দেশব্যাপী বিজয় সুনিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে ইস্তাম্বুলসহ সবচেয়ে বড় পাঁচটি শহরও রয়েছে। ইস্তাম্বুলে এরদোয়ান তাঁর পছন্দের একে পার্টির প্রার্থীর পক্ষে জোরালো প্রচার চালিয়েছিলেন। তিন দশক আগে ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে সাফল্যের পরই এরদোয়ানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পথ খুলে গিয়েছিল।
রিপাবলিকান পিপলস পার্টির মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু। তুরস্কের নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ইমামোগলুকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিতে এরদোয়ানের একে পার্টি যে জোর প্রচেষ্টা চালায়, তাতে করে তুরস্কের রাজনীতিতে ইমামোগলুর উত্থান ঘটে। মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ঘটনাকে তিনি পরিষ্কারভাবে বৈশ্বিক পরিসরে নিয়ে গেছেন। এই সাফল্যকে নির্বাচনী কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে বিরোধী দল ও ভোটাররা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তার প্রতীক হিসেবে দেখছেন তিনি।
রোববারের নির্বাচন সম্পর্কে ইমামোগলু বলেছেন, ‘এই নির্বাচন তুরস্কে ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের সমাপ্তি এবং গণতন্ত্রের পুনরুত্থানের সূচনা।’ কর্তৃত্ববাদী শাসনে থাকা নিপীড়িত মানুষ এখন ইস্তাম্বুলের দিকে তাকিয়ে থাকবেন। পরদিন সোমবার ইমামোগলু এরদোয়ানের দিকে বিশাল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। ইস্তাম্বুল শহরের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের সামনে তিনি ঘোষণা দেন যে ‘এক ব্যক্তির শাসনের যুগ শেষ হয়ে গেছে।’
এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রথমত ভোটারদের ক্ষোভ ভূমিকা রেখেছে। আমার সহকর্মী বেরিল এসকি ও কারিম ফাহিম জানান, ‘এরদোয়ান যেভাবে অর্থনীতি পরিচালনা করেছেন, সেটাই তাঁর ভোটের দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় কারণ।