মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ঘোষিত সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির আওতায় সব ধরনের আমানত ও ঋণের সুদ হার বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে আমানত ও ঋণের সুদ আনুপাতিক সমান হারে বৃদ্ধির পরিবর্তে আমানতের সুদ বাড়ছে কম, ঋণের সুদ বেশি হারে বাড়ছে। গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমানতের সুদ দশমিক ৫৪ শতাংশ ও ঋণের সুদ বেড়েছে ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ওই সময়ে আমানতের চেয়ে ঋণের সুদ হার ৪ দশমিক ৫২ গুণ বেশি বেড়েছে। এতে চড়া মূল্যস্ফীতির মধ্যে আমানতকারীরা মুনাফা কম পেয়ে ও ঋণগ্রহীতারা বেশি সুদ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এদিকে সুদ হার বাড়লেও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি এখনও বাগে আসেনি। সামান্য কমে এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, গত দুই বছর ধরে দেশে চড়া মূল্যস্ফীতির হার অব্যাহত। গত অর্থবছর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করে আসছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ঋণের সুদ হার ব্যাপকভাবে বাড়ানো শুরু হয়েছে। আমানতের সুদ হার বাড়তে শুরু করেছে গত অক্টোবর থেকে। ওই সময়ে ঋণের সুদ হার যেভাবে বেড়েছে, ওই হারে আমানতের সুদ হার বাড়েনি। গত জুলাই থেকে ঋণের সুদ হারের ঊর্ধ্বসীমা ৯ শতাংশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদ হার নির্ধারণের জন্য করিডোর আরোপ করেছে। এতে ঋণের সুদ হার বাড়ানোর পদ্ধতি থাকলেও ব্যাংকের আমানতের ব্যাপারে কোনো পদ্ধতি নেই। ফলে ব্যাংকগুলো নিজেদের চাহিদামতো আমানতের সুদ হার বাড়াচ্ছে। এতে আমানতের সুদ হার বেড়েছে অনেক কম। এখনও মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে আমানতের গড় সুদ হার অনেক নিচে রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ওই সময়ে আমানতের গড় সুদ হার ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির হারের প্রায় অর্ধেক আমানতের সুদ হার। ফলে ব্যাংকে টাকা রাখলে এখন টাকার ক্ষয় বেশি হচ্ছে। এতেও গ্রাহকরা ব্যাংকে আমানত রাখতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। যে কারণে আমানত বৃদ্ধির হার খুবই কম।