গত সোমবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাস্তবায়ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, আইনটি পাস হওয়ার চার বছর পর। আইনটি নিয়ে প্রচুর আইনি বিবাদ আছে। সেসবের মধ্যে না ঢুকে এই আলোচনায় বোঝার চেষ্টা করব, আইনটি কেন নির্বাচনের সপ্তাহ কয়েক আগে বাস্তবায়ন করা হলো?
আইনটি বাস্তবায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু অংশ এবং পশ্চিমবঙ্গে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। বিরোধিতা হচ্ছে কেরালায়, যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সিস্ট (সিপিআইএম) এবং তামিলনাড়ুতে, যে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ডিএমকে।
পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় আইনটি বিরোধিতার কারণ বড়সংখ্যক মুসলমান ভোটার। সিএএতে সংখ্যালঘু মুসলমান ছাড়া অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নাগরিকত্ব পাবে। তামিলনাড়ুতে বিরোধিতার প্রধান কারণ মুসলমান সম্প্রদায়ের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার তামিলদেরও নাগরিকত্বের সুযোগ না দেওয়া। এই তিন রাজ্যে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে যে ধরনের প্রতিবাদ হচ্ছে, তা কিন্তু অন্য রাজ্যে—এমনকি কংগ্রেস–শাসিত রাজ্যেও—এখনো হয়নি।
রাজনৈতিক অঙ্ক
ভারতে মোটামুটিভাবে সবাই ধরে নিয়েছেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসতে চলেছে; কারণ, কোনো সংগঠিত বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদিকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। তিনি যে পরিশ্রম করছেন এবং রোজ যে ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তা দেখে মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ২০১৪ বা ২০১৯-এর নির্বাচনে তিনি বা তাঁর দল এত পরিশ্রম করেনি।
বিরোধীদের পেছনে লাগাতার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা লাগিয়ে রাখা হয়েছে, বড় দলের মধ্যে সামান্য চ্যালেঞ্জ যাঁরা ছুড়তে পারতেন, তাঁদের নিজেদের দিকে টেনে নেওয়া হয়েছে, যেমন বিহারে নীতীশ কুমার বা উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রীয় লোক দল। যাঁদের টানা যাচ্ছে না, তাঁরা জেলে, যেমন ঝাড়খন্ডে হেমন্ত সরেন। কিছু ক্ষেত্রে শক্তিশালী বিরোধী দলকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যেমন মহারাষ্ট্রে শিবসেনা বা ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি। একেক রাজ্যে একেক কৌশল বিজেপি এমনভাবে নিয়েছে যে বিরোধীদের খেলার মতো তাস বিশেষ নেই।