নির্বাচনের আগে ভারতে এখন আলোচনা প্রায় পুরোপুরি নরেন্দ্র মোদিকেন্দ্রিক। অর্থাৎ মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) লোকসভা নির্বাচনে ৬০ না ৭০, কত শতাংশ আসন পাবেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ঠিক সেই সময় উত্তর-পূর্ব ভারতে একটা নতুন রাজনৈতিক ন্যারেটিভ বা আখ্যান তৈরি হচ্ছে। একটা উদাহরণ দিলেই এর চেহারাটা স্পষ্ট হবে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মিজোরামের বিধানসভায় একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিরোধিতার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত অবাধ যাওয়া-আসা বন্ধের সিদ্ধান্তের নিন্দা করা হয়। মিজোরাম বিধানসভায় এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার কারণ গত ৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ঘোষণা।
অমিত বলেছিলেন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত বন্ধ করা হবে। দুই দিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখতে কেন্দ্র ভারত-মিয়ানমার ‘ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম’ (এফএমআর) বা অবাধ চলাচল বাতিল করবে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের উন্নতিতে’ আসিয়ান দেশগুলোকে মাথায় রেখে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি নেওয়া হয়েছিল। ১১টি আসিয়ান দেশের মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে। সে কারণেই ২০১৮ সালে ভারত-মিয়ানমারের মধ্যে এফএমআর পাকাপাকিভাবে চালু হয়। এখন এটা বন্ধ করতে চায় ভারত। এ সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে।
মিজোরামের বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে. সাপডাঙ্গা যে কথাগুলো বলেছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ এবং ভারতের জন্য উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, ‘জো সম্প্রদায় আজ বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিভাজিত। কিন্তু তারা শতকের পর শতক ভারতের মিজোরাম ও মিয়ানমারের চিন পর্বতমালার বাসিন্দা। তাদের নিজেদের প্রশাসন ছিল। কিন্তু তারা বিভাজিত হলো, কারণ ব্রিটিশ অঞ্চল অধিগ্রহণ করল।’