মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন যুদ্ধের খবর পাচ্ছে বাকি বিশ্ব। হররোজ সেখানে বিপুল গোলা-বারুদ পুড়ছে। 'তাতমা-দ' নামে পরিচিত সরকারি বাহিনী রাষ্ট্রীয় খরচে যুদ্ধ চালায়। কিন্তু প্রতিপক্ষ গেরিলারা এত যুদ্ধরসদ কোথায় পাচ্ছে? গেরিলাদের অর্থ আসছে কোথা থেকে? এসব নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। কিন্তু বিস্ময়কর হলো, যুদ্ধের খরচপাতি যোগাতে নেমে দেশটির গেরিলারা রীতিমতো ব্যাংক দিয়ে ফেলেছে। গেরিলাযুদ্ধের আন্তর্জাতিক ইতিহাসে ঘটনা হিসেবে এটা বেশ বিরল।
যেভাবে একটা 'গেরিলা ব্যাংকে'র শুরু
মিয়ানমারে একেক অঞ্চলে গেরিলা সংগঠনের একেক নাম। প্রান্তিক সাতটি প্রদেশে অ-বামার জাতিগুলোর গেরিলা সংগঠনের আয়ের প্রধান উৎস স্থানীয় ব্যবসা ও চাঁদা। ব্যবসার মধ্যে গাছপালা থেকে অত্যাধুনিক মাদক পর্যন্ত সবই আছে। সংগঠন হিসেবে এরা অনেক পুরোনো এবং অভিজ্ঞ।
মধ্যাঞ্চলের পরিস্থিতি পুরো সেরকম নয়। সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে তাতমা-দ'র বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা বামার তরুণ-তরুণীরা যুদ্ধবিদ্যা ও অর্থ সংগ্রহ দুটোতেই নবীন। পিপলস্ ডিফেন্স ফোর্স বা পিডিএফ নামে পরিচিত এই গেরিলাদের ব্যবসা করে অর্থ আয়ের জন্য কোনো কোনো দেশের সঙ্গে নেই কোনো সীমান্ত।
শুরুতে পিডিএফগুলোর অর্থ আসত প্রবাসী সমর্থকদের দান থেকে। সেই অর্থ দেশের ভেতর পৌঁছানোও সহজ হতো না। সরকারের নানান নজরদারির কারণে। সরকারের কাছে নাম-পরিচয় চলে যাবে এই ভয়ে চাইলেও দেশের বাইরে থেকে অনেকে গণতন্ত্রের সংগ্রামে অর্থ সাহায্য দিতে পারতেন না। এসব সমস্যা এড়াতে যেয়ে বামার গেরিলারা অর্থ লেনদেনের পথ হিসেবে নিজেরা রীতিমতো একটা ব্যাংক খুলে ফেলে।
২০২১-২২ এ সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে দেশের নানান প্রান্তে বহু মানুষ রাষ্ট্রীয় চাকুরি ছেড়েছিলেন। তাদের গেরিলা প্রশাসনের নানা কাজে লাগিয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়ার প্রয়োজনও এই ব্যাংকের ধারণায় গতি দিয়েছিল। এসব উদ্যোগে লিপ্ত গেরিলারা ক্রমাগত চেষ্টা করছে প্রযুক্তির দিক থেকে জান্তার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে।