গেট পেরোতেই গাড়ি থামল। ডান দিকে গার্ডরুম। নাম বললাম। তাঁরা কী সব বলাবলি করছিলেন ওয়াকিটকিতে। কানে ভেসে এল ‘সরাফ আহমেদ রাইটার জার্মানি’।
গাড়িটি তল্লাশি করে বলা হলো, ভেতরে যাবে না, গ্যাস সিলিন্ডারের গাড়ি। প্রহরীরা বললেন, ‘আমাদের গাড়ি আপনাকে ভেতরে নিয়ে যাবে।’ নাম ও ফোন নম্বর লিখে দিলাম। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া বইগুলো স্ক্যান করা হলো।
বললাম, ‘আচ্ছা, গাড়িতে না গিয়ে আমি কি হেঁটে যেতে পারি?’ বলা হলো, কেউ তা করে না, তবে হেঁটেও যেতে পারেন। সামনে আরও দুটি তল্লাশিচৌকি (চেকপোস্ট)। শুধু নাম বলবেন।
পরের তল্লাশিচৌকিকে ওয়াকিটকি দিয়ে জানানো হলো, ‘কামিং কামিং, রাইটার জার্মানি।’ বহু বছর ধরে লেখালেখি করি। কিন্তু কস্মিনকালে এই সম্বোধন শুনিনি।
আগের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা থেকে প্রথম আলো অফিসে যাই। জার্মানিতে ফেরার আগে সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করতেই উনি আমাকে ১২তলায় যেতে বললেন। সেখানে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি।
হঠাৎ একটা ফোন। বলা হলো আমি যেন দ্রুত করোনা র্যাপিড টেস্ট করি, কাল (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ। রাত তখন নয়টা। ভাবি, এত রাতে কোথায় র্যাপিড টেস্ট করাব। সহকর্মীদের সহযোগিতায় দ্রুত রাতেই শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে টেস্ট করাই।
আশঙ্কায় সময় কাটে, আবার যেন করোনা পজিটিভ না হয়। ২০২২ সালের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের দিন ঠিক হলেও করোনা পজিটিভ হওয়ায় সাক্ষাৎটি বাতিল হয়। যা–ই হোক, এবার করোনা টেস্ট নেগেটিভ। অবশেষে গণভবন যাচ্ছি।
আমি কোনো বাঘা সাংবাদিক নই। লেখকও নই। তবু শেষ অবধি লেখক হিসেবে এই সম্মান এক বড় প্রাপ্তি। ইতিহাসের চরিত্র যখন হন কোনো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তখন বাইরে থেকে একজন গবেষক বা লেখকের সেখানে পৌঁছানো যেমন কঠিন, তেমনি পৌঁছাতে পারলেও তা হয়ে যেতে পারে ফরমায়েশি রচনা। তাই অজানা গুরুত্বপূর্ণ সংগৃহীত তথ্য নিয়ে এই বই রচনার সময় খুব সাবধানে অগ্রসর হতে হয়েছিল। সহযোগিতা করেছিলেন মতি ভাইসহ (প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান) প্রথমা প্রকাশনের সম্পাদনা টিম।