বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেন যুদ্ধটা নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু লুকানো একটি বিপদের কারণে বাস্তবে সেটি সম্ভব না–ও হতে পারে। সেই বিপদটা হলো, রাশিয়া সত্যি সত্যি বড় একটি আক্রমণ অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই কারণেই বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেন নিয়ে নতুন পরিকল্পনা আঁটছে। নতুন সেই পরিকল্পনাটা লিখিত রূপ না পেলেও রাজনীতিতে তার প্রত্যক্ষ রূপ দেখা যাচ্ছে।
একটি দৃষ্টান্ত হলো: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন তার সেনাপ্রধানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি বিষয়ে আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড কিয়েভে ছুটে যান। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউক্রেন নীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে নুল্যান্ডের।
নুল্যান্ড কেন কিয়েভে ছুটে গেলেন? প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, দক্ষিণ কিয়েভের ঘটনাপ্রবাহের কারণে হোয়াইট হাউস নুল্যান্ডকে তড়িঘড়ি করে ইউক্রেন যেতে বলেছেন। সত্যিকারের একটি উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল যে সেনাপ্রধান জালুঝনি সেনাবাহিনীকে জেলেনস্কির বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন।
এখন পর্যন্ত জালুঝনি তাঁর সেনাবাহিনীকে জেলেনস্কি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেননি। অনেকে মনে করছেন, কিয়েভে গিয়ে নুল্যান্ড জেলেনস্কির সঙ্গে যতটা সময় ধরে আলোচনা করেছেন, সম্ভবত তার চেয়ে বেশি সময় ধরে কথা বলেছেন জালুঝনির সঙ্গে। যদিও তাদের মধে৵ প্রকাশ্যে আলোচনা হয়েছে এমন কোনো রেকর্ড নেই। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, নুল্যান্ডের কিয়েভ সফরের উদ্দেশ্য ছিল জালুঝনিকে শান্ত করা এবং তাঁকে আরও বড় কিছু দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া।
ওয়াশিংটন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের সেনা নেতৃত্বের বদল নিয়ে কিছুই বলেনি। হোয়াইট হাউস বলেছে, এটা ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নির্দিষ্ট করে বললে, এটা পুরোপুরি অর্থহীন বক্তব্য। কারণ, ২০১৪ সালের আগে থেকে ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কারসাজি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ওয়াশিংটনের চাওয়া বাস্তবায়নে প্রথম অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়েছিলেন নুল্যান্ডই।
জালুঝনিকে যে সেনাবাহিনী থেকে বিদায় নিতে হবে, তা নিয়ে কারও মধে৵ বিন্দুমাত্র বিস্ময় নেই। কিয়েভের তথাকথিত পাল্টা আক্রমণ অভিযানের ব্যর্থতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও অন্যান্য সহযোগিতা অপচয়ের দায় কাউকে না কাউকে বহন করতেই হবে।