শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ২০২৪ সাল তাঁর দেশে নির্বাচনের বছর। নাগরিকেরা খুশি এই সংবাদে। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধে শ্রীলঙ্কা সরকার সেদেশের বন্দরে চীনের ‘গবেষণা জাহাজ’ আসা এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। বোঝা যাচ্ছে, আসন্ন নির্বাচন ঘিরে লঙ্কার রাজনীতিতে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের যে অদৃশ্য মল্লযুদ্ধ হবে, সেটি শুরু হয়ে গেছে।
যেমনটি ঘটেছিল কয়েক মাস আগে মালদ্বীপে নির্বাচনকে ঘিরে। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের নির্বাচন শেষে ভূরাজনৈতিক ফলাফলে যে ‘ভারসাম্য’ বিরাজ করছে, শ্রীলঙ্কার নির্বাচন তাকে এক দিকে হেলে দেবে। তবে ভাষ্যকারেরা এ–ও ভাবছেন, ভোটাররা কি আগের মতো জাতিগত ধারায় ভাগ হয়ে ভোট দেবেন? কিংবা নির্বাচন হলে অর্থনৈতিক দুর্দশা আদৌ কাটবে কি না?
রনিল কেন নির্বাচন দিতে রাজি হলেন
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের কথা বাংলাদেশেও বহুল প্রচারিত। আইএমএফের কড়া শাসনে আছে দেশটি। প্রেসিডেন্ট সামরিক আমলাতন্ত্রের সমর্থনে যখন যেটুকু দরকার কর ও দাম বাড়ান কেবল। তাই বলে নির্বাচনী ইস্যুর অভাব নেই। আগের নির্বাচনে দেশটি ভাসছিল সিংহলি জাতীয়তাবাদী উল্লাসে। এবার সেটি নেই। দ্বিদলীয় রাজনৈতিক প্রথা থেকে মুক্তির বাসনা আছে কেবল।
এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হয় ২০১৯ সালে, পার্লামেন্ট নির্বাচন হয় ২০২০ সালে। উভয়ের মেয়াদ পাঁচ বছর। সেই হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগে হওয়ার কথা। তবে সবাই বলছেন, এবার আগে হবে পার্লামেন্ট নির্বাচন। ব্যতিক্রমের পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে।
গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে যে তিনটি দল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়, এখনকার প্রেসিডেন্ট তাঁদের কেউ নন। অঘটন কেবল এটিই নয়, জন–আন্দোলনের ভেতর দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন রনিল! আন্দোলনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাঁর গলা টিপে ধরে; আন্দোলনের কর্মীরা যাকে বলেন ‘প্রতিবিপ্লব’।
তখন থেকে লঙ্কা নির্বাচনের অপেক্ষায়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও আটকে আছে। সেই নির্বাচন হওয়ার কথা দুই বছর আগে। প্রেসিডেন্ট রনিল কোনো নির্বাচনই দিতে চাইছিলেন না। নতুন বছরের শুরুতে তিনি মত পাল্টিয়েছেন। যে ‘হিসাব’ থেকে সেটি ঘটুক,Ñলঙ্কার মানুষ খুশি এতে। তাঁরা নির্বাচিত সরকার দেখতে চান। এখনো অবশ্য স্পষ্ট নয়, কোন নির্বাচন আগে হবে।