বছর পাঁচেক আগে খ্যাতনামা চিত্রগ্রাহক শহিদুল আলমকে নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস–এর পাতায় লেখা এক উপসম্পাদকীয়তে গায়ত্রী চক্রবর্তী-স্পিভাক প্রশ্ন তুলেছিলেন, শহিদুলকে কার এত ভয়?
উত্তরটা অধ্যাপক গায়ত্রী-স্পিভাক নিজেই দিয়েছিলেন এভাবে: বাংলাদেশ ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। শহিদুল আলম তাঁর প্রতিবাদে নাগরিক অধিকারের পক্ষে লড়ছেন। সেটাই তাঁর অপরাধ। সত্যিকে ক্ষমতাসীন মহল বড় ভয় পায়।
প্রশ্ন, অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে কার এত ভয়? জানার জন্য প্রশ্নটি করা হয়েছিল স্যাম ড্যালি-হ্যারিসকে। তিনি বিশ্বজুড়ে অনাহারের বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলনের একজন প্রধান কারিগর, রেজাল্টস নামক সংগঠনের প্রধান।
রিক্লেইমিং আওয়ার ডেমোক্রেসি নামক গ্রন্থের লেখক তিনি, যে গ্রন্থকে জিমি কার্টার বলেছিলেন পৃথিবীকে বদলানোর ‘রোডম্যাপ’। তাঁর অন্য পরিচয়, অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তিনি যৌথভাবে ‘মাইক্রোক্রেডিট সামিট’–এর প্রতিষ্ঠাতা।
স্যাম ড্যালি-হ্যারিসের সঙ্গে কথা হচ্ছিল নিউইয়র্কের এক বাংলা টিভির টক শোতে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিনি ভিডিওতে যুক্ত হয়েছিলেন।
প্রশ্ন শুনে তিনি খানিকটা হাসলেন। বললেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ক্ষমতাসীনদের হাতে তার সবচেয়ে উজ্জ্বল সন্তানেরা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। গান্ধী বা ম্যান্ডেলার কথা ভাবো। অথবা ভাবো আমেরিকার মার্টিন লুথার কিংয়ের কথা।
‘আমার ১২ ও ৯ বছরের পুত্ররা জানতে চেয়েছিল ইউনূসকে কেন জেলে যেতে হচ্ছে? আমি মার্টিন লুথার কিং ও তাঁর মতো “ভিশনারি” নেতাদের উদাহরণ দিয়ে বলেছি, এইসব ব্যক্তি সব সময়ই নিগ্রহের শিকার হন।’
কথাটা বাগাড়ম্বর মনে হবে অনেকের কাছে। ইউনূস মোটেই গান্ধী বা ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনীয় নন। তাঁদের মতো একটি দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে তিনি নেতৃত্ব দেননি। অথবা লুথার কিংয়ের মতো নাগরিক অধিকার আন্দোলনকে বিশ্বের মানচিত্রে উপস্থিত করেননি।
কিন্তু তিনি যেটা করেছেন, সেটাও কম বিপ্লবী নয়। কী সেই বিপ্লব, স্যাম ড্যালি-হ্যারিসই আমাকে বুঝিয়ে বললেন।
‘ইউনূসকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে এই যে লড়াই, তাতে তোমার রণকৌশল বা স্ট্র্যাটেজি কী ছিল?’