চড়া বাজারের উত্তাপে পুড়ছে সীমিত আয়ের মানুষ; বছরজুড়েই ভোক্তারা যেমন ছিলেন দিশেহারা, তেমনি বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটে সাধারণের ওপর নেমে আসা এ চাপ সামলাতে হিমশিম অর্থনীতিও সঠিক দিশা পায়নি।
যে কারণে আইএমএফের ঋণ পাওয়ার সুখবর দিয়ে শুরু হওয়া বিদায়ী বছরেও নানান উদ্যোগের পরও অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফেরানোর চ্যালেঞ্জ বছর শেষে পুরোদমে উতরাতে পারেনি বাংলাদেশ। সংকটের সেই মেঘ সরিয়ে ঝকঝকে নতুন প্রত্যাশার চাপ নিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন বছর।
মূল্যস্ফীতিকে সঙ্গী করে লড়তে থাকার মধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক অস্থিরতাও অর্থনীতিকে চোখ রাঙিয়েছে নানাভাবে। বিনিয়োগে খরা, রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সে উথাল-পাতাল সময়ের মধ্যে ভিসা নীতির ভয় মাঝেমধ্যেই ব্যবসা-বাণিজ্যকে পিছু টেনে ধরেছে, যা অর্থনীতির গতিকে করেছে ধীর। এরমধ্যেই বিভিন্ন খাতে সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটার চেষ্টা ছিল সরকারের।
তবুও প্রায় দুই বছর ধরে চলা ডলার সংকটের ঝড় পুরোপুরি থামানো যায়নি। বছরের শেষ ভাগে আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তি ও বাজেট সহায়তার ঋণের অর্থছাড়ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনকে উন্নতির ধারায় নিতে পারেনি। জ্বালানির দাম কমে এলেও বাড়তে থাকা বিপুল দায় নিয়মিত সরবরাহ ব্যবস্থায় ঝাঁকুনি দিয়েছে প্রায়ই। ডলারের ঘাটতি আমদানি নির্ভর শিল্প ও সেবাখাতসহ সার্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা জিইয়ে রেখেছে।
তবে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আর টালমাটাল সময় পেরিয়ে আসার ইঙ্গিত নতুন বছরে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। বছরজুড়ে উচ্চাভিলাশী জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে পিছু টেনে ধরার আভাসের মধ্যেও আগের বছরের ধারাবাহিকতায় আরও কিছু নতুন নতুন মেগা প্রকল্পের দ্বার উন্মোচন সরকারকে শক্তি জুগিয়েছে এগিয়ে যাওয়ার।