সাত ম্যাচের ছয়টিতেই পরাজয়। পয়েন্ট টেবিলেও অবস্থান একেবারে নিচের দিকে। গত দুই দশকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আর কোনো আসরে দলগতভাবে এতটা খারাপ পারফরম্যান্স দেখায়নি বাংলাদেশ। ক্ষীণ হয়ে এসেছে আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগও। এ দুর্দশা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে নৈতিক মনোবলের অভাব তাদের পারফরম্যান্সে ফুটে উঠেছে। এজন্য অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নৈতিক মানদণ্ড এবং দলের শৃঙ্খলা ও অনুশাসন না মানাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া ও বণিক বার্তার অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন সময়ে টুর্নামেন্ট চলাকালে দলের সঙ্গ ত্যাগ করে শোরুম উদ্বোধনের জন্য দেশে আসা, অর্থ পাচারে অভিযুক্ত বেটিং সাইটের পণ্যদূত হওয়ার মতো বিতর্কে জড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। চলতি বছরেই তার দুবাইয়ে পুলিশ হত্যা মামলার আসামির শোরুম উদ্বোধন ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। শেয়ার কারসাজিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন তিনি। গত তিন বছরে বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে সন্দেহজনক লেনদেনকারীদের তালিকায় বেশ কয়েকবার তার নাম এসেছে। এর আগে ২০১৯ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় তাকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যদিও আইসিসির এ শাস্তি তাকে অর্থনৈতিক অপরাধের প্রলোভন থেকে দূরে সরাতে পারেনি।
সাকিব আল হাসান গত বছর বেটউইনার নিউজ নামে একটি অনলাইন বেটিং সাইটের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী পণ্যদূত হওয়ার চুক্তি করেছিলেন। বিষয়টি সে সময় তার বিরুদ্ধে বেশ সমালোচনার জন্ম দেয়। বিসিবির অনুমোদন ছাড়া ক্রিকেটারদের কোনো ধরনের পণ্যের দূত হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে সময় সাকিব আল হাসান ক্রিকেট বোর্ডের কোনো অনুমোদন নেননি। আবার সমালোচনার মধ্যেও বেটিং সাইটটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে চাননি তিনি। পরবর্তী সময়ে বিসিবির চাপে তিনি চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন। এ ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে উঠে আসে, বেটিং সাইটটির মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারও হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। এ বিতর্কের পর সাকিব আল হাসানকে নিজের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।