এবার ইলিশের দাম যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, সেটা মাছের বাজারে চলমান মূল্যস্ফীতির সঙ্গেও বড় বেমানান। ইলিশ আহরণ কোনো কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার মধ্যে এর কারণ নিহিত থাকলে সেটা কিন্তু স্বীকার করা উচিত।
দেশে ইলিশের উৎপাদন ও আহরণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন এর দাম অধিক হারে বেড়ে চলেছে, সেটা প্রশ্ন বটে। ইলিশ কিনতে না পারা বিপুলসংখ্যক মানুষ এটা জিজ্ঞেস করছে ক্ষোভের সঙ্গে। তাতে তো আর দাম কমবে না! এই পরিস্থিতিতে ভারতে প্রায় চার হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে জানা যাচ্ছে, এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ইলিশও পাঠাতে পারেননি রপ্তানিকারকেরা।
এর বড় কারণ, গেলবারের চেয়ে অনেক বেশি দামে ইলিশ সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাঁদের। যাঁরা আমদানি করছেন, তাঁরাও ইলিশের দামে অসন্তুষ্ট। এরই মধ্যে ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। যে সময়ের মধ্যে এটা রপ্তানি করতে বলা হয়েছে, তার অনেকটা পড়ে যাচ্ছে নিষেধাজ্ঞায়। প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন বন্ধ থাকলে রপ্তানিও বন্ধ থাকার কথা। এর মধ্যে পূজাও পেরিয়ে যাবে। পরে আর রপ্তানির সুযোগ না দেওয়ারই কথা। সুতরাং গতবারের মতো এবারও বেশি ইলিশ পাঠানো যাবে না ভারতে।
চলতে থাকা প্রতিকূল আবহাওয়ায় ইলিশ আহরণও গেছে কমে। বিক্রেতারা বলছেন, এবার এক-চতুর্থাংশ ইলিশ কম পেয়েছেন তাঁরা। এ অবস্থায় ইলিশের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়বে কেন, এর ভালো ব্যাখ্যা নেই। এক কেজি সাইজের মানসম্পন্ন ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকার নিচে মিলছে না। গত বছর এটা হাজার টাকায় পাওয়া গিয়েছিল। সেই দামেও ক্রেতারা অসন্তুষ্ট ছিলেন। এবার তাঁরা ক্ষুব্ধ। এরই মধ্যে ইলিশ রপ্তানির খবর পেয়ে অনেকের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। দেশের মানুষকে যতটা সম্ভব কম দামে ইলিশ খাওয়াতে এর রপ্তানি কিন্তু বন্ধ রাখা হয়েছে সাধারণভাবে। আর প্রতিবছর যে পরিমাণ ইলিশ আহরণের কথা বলা হচ্ছে, সেই তুলনায় ভারতে রপ্তানি তো খুবই কম। অনুমতিটা আবার দেওয়া হয়েছে ভরা মৌসুমে। আর দেখাই যাচ্ছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী রপ্তানি করা যাচ্ছে না।