টানা তিন বছর তিন মাস কোনো বেতন-ভাতা পান না দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭৫০ শিক্ষক। মূল্যস্ফীতির চাপে ও দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তাদের মুখে নেই কোনো হাসি। আছে অনেক অবহেলা ও বঞ্চনার কথা। ক্লাস নিচ্ছেন অভুক্ত পেটে। অথচ বড় আশা করে প্রকৌশল শিক্ষায় দীক্ষা নিয়েছিলেন এসব মানুষ গড়ার কারিগর।
এই শিক্ষকরা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের শেষ হয়ে যাওয়া স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের (স্টেপ) শিক্ষক। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুনে শেষ হয়ে যাওয়ার পর সরকার এ শিক্ষকদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে স্থানান্তরে বিলম্ব হওয়ায় এ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রাপ্তিও ঝুলে যায়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এক বছর বেতনও পেয়েছেন। ২০২০ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত তারা আর কোনো বেতন-ভাতা পাননি। গত ৩৯ মাস শূন্য হাতে প্রতিদিন অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন শিক্ষকরা। এ অবস্থায়ও তারা ক্লাস, পরীক্ষা যথারীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর কর্মরত মোট শিক্ষকের অর্ধেকই তারা। এ কঠিন বাস্তবতা সামনে নিয়ে আজ আবারও এসেছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। তবে এই দিবসের কোনো তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন না এই শিক্ষকরা। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিক্ষার জন্য কাঙ্ক্ষিত শিক্ষকের স্বল্পতা ও বৈশ্বিক করণীয়।’ দিবসটি পালন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।