গত আড়াই মাসে ভূরাজনৈতিক কৌশলগত জায়গায় বেশকিছু ঘটনা ঘটে গেছে। ব্রিকস, আসিয়ান ও জি২০ সম্মেলন নিয়ে আলোচনা, পরামর্শ ও মতামত দিয়ে গেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ সর্বদা এ সম্মেলনগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছে। ব্রিকস ও জি২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি এবং আসিয়ান বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগদানে তা স্পষ্ট।
এমন উপস্থিতি আমাদের দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার সুযোগ দিয়েছে এবং দেখিয়ে দিয়েছে বাকি বিশ্বের কাছে কীভাবে আমরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে পেরেছি। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে জোর দেয়ার সুযোগও করে দিয়েছে এ সম্মেলনগুলো।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জি২০-কে সামনে অগ্রসর হওয়ার জন্য কিছু প্রস্তাব গুরুত্বসহকারে বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করেছেন। সেগুলো ছিল: (ক) ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, (খ) শুল্কমুক্ত এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন ও সুবিধা প্রদান করা প্রয়োজন, (গ) অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য নারীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং (ঘ) বিশ্বব্যাপী আরো উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারকে শক্তিশালী করতে হবে। শেখ হাসিনা ওই বৈশ্বিক মঞ্চে আরো দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, বিশ্বজোড়া প্রায় ৮০ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে আছে, যা মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ। অন্যদিকে সামরিক খাতে বিশ্ব প্রায় ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে। অথচ তারা ভুলে যায় যে মাত্র ৫৫০ কোটি ডলার দিয়ে দরিদ্র এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর ক্ষুধা নিরাময় করা সম্ভব। তিনি আরো জোর দিয়ে বলেছেন যে কভিড-১৯ মহামারী, নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এতে সারা বিশ্বের মানুষ খাদ্য, জ্বালানি এবং সার সংকটে পড়েছে। এটি একটি সমৃদ্ধ সাধারণ ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। কারণ আমরা এক পৃথিবীতে এক পরিবার।